হিন্দু ধর্মের অন্যতম পুণ্য উৎসব হল মহাশিবরাত্রি। এই উৎসবের তিথিতেই আদিকালে শিব ও শক্তির মিলন ঘটেছিল। দৃকপঞ্চং মতে, দক্ষিণ ভারতে মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষে মহাশিবরাত্রি পালন করা হয়। তবে উত্তর ভারতে ফাল্গুনে মাসে এই পুণ্য তিথির উদযাপন হয়। যদিও দুই পঞ্জিকা অনুযায়ী একইদিনে পালন করা হয় দেবাদিদেব মহাদেবের পুজোর তিথি।
এইদিন পুণ্যার্থীরা মন্দিরে গিয়ে শিবের মাথায় জল ঢালেন। হরগৌরীর একত্রে পুজো করা হয়। এছাড়াও মন্ত্রপাঠ ও ভোগ আয়োজনের প্রক্রিয়াও হয় এই দিন। এই বছর মহাশিবরাত্রির তিথি পড়েছে ১৮ ফেব্রুয়ারি। তবে নিশীথ কাল পুজোর সময় শুরু হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত্রি ১২টা বেজে ৯ মিনিটে ও পুজোর লগ্ন শেষ হবে একটায়। শিবরাত্রি পরাণের লগ্ন শুরু হবে আগামীকাল ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোর ছটা বেজে ৫৬ মিনিটে। লগ্ন শেষ হবে দুপুর তিনটে বেজে ২৪ মিনিটে।
মহাশিবরাত্রির দিনের মাহাত্ম্য
বছরের প্রতিটি মাসেই একটি করে দিন মহাশিবরাত্রি হিসেবে পালন করা হয়। তবে মহাশিবরাত্রির একটি আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে। যে কারণে এই দিনটি বিশেষভাবে পালন করেন পুণ্যার্থীরা। বলা হয়, এই দিনেই মা পার্বতীর সঙ্গে বিবাহ হয় দেবাদিদেব মহাদেবের। এছাড়াও এদিন একাধিক অতিপ্রাকৃত ঘটনারও সাক্ষী ছিলেন দুজনে। পুরাণ মতে, এই দিন শিব ও শক্তির দ্বিতীয়বার মিলন ঘটেছিল। তাই এই রাতকে মহাদেবের পুণ্য রাত হিসেবে মনে করা হয়। মা পার্বতী পুরাণে প্রকৃতির প্রতীক। অন্যদিকে মহাদেব চেতনার প্রতীক। শিব ও শক্তি দুইয়ে মিলে জগত সংসারের সৃষ্টিযজ্ঞের আয়োজন করেন। গড়ে ওঠে এই বিশাল পৃথিবী।
অন্য এক পুরাণ মতে, মহাশিবরাত্রির মাঝ রাতে দেবাদিদেব মহাদেব ব্রহ্মার বরে রুদ্র রূপ ধারণ করেছিলেন। মনে করা হয়, এই রাতেরই পুণ্য লগ্নে প্রলয়ঙ্কর তান্ডব নৃত্যে মেতে ওঠেন শিব। জগতের সৃষ্টি স্থিতি প্রলয়ের তালে তালে ধ্বনিত হয় তাঁর নৃত্যপদধ্বনি। জগতেরই সৃষ্টি স্থিতি প্রলয়ের জন্য তাঁর এই তান্ডব নৃত্য। এই ধ্বংসকারী নৃত্যেরও এক বিশেষ কারণ রয়েছে। মা সতীর দেহত্যাগের ঘটনা শুনতেই প্রচন্ড ক্রোধান্বিত হয়ে পড়েন তিন জগতের নাথ। তার এই প্রলয় নৃত্যের তিথিতেই উদযাপিত হয় মহাশিবরাত্রি।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup