কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে অনেকেই তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন এক লাইন গান শোনাতে। অরিজিৎ সিং সেদিন পাশে দাঁড়ানো রাজ চক্রবর্তীর মুখে খানিকটা পরিতৃপ্তির হাসি ফুটিয়ে প্রথমে ধরেছিলেন, ‘বোঝে না সে বোঝে না’ গানটি, পরক্ষণেই শাহরুখ খানকে সামনে পেয়ে তাঁর সম্মানে ‘রং দে তু মোহে গেরুয়া’ গানটির এক লাইন শুনিয়েছিলেন মঞ্চে। এরপর সদ্য ইকো পার্কে তাঁর এক কনসার্ট বাতিল হয়। রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দেয় অরিজিতের কনসার্ট বাতিল কাণ্ড। বিতর্কে উঠে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে মমতার সামনে অরিজিতের গাওয়া ‘রং দে তু মোহে গেরুয়া ’ গানের লাইন প্রসঙ্গ। এরপর সদ্য তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পোস্ট করেন তাঁর পছন্দের কয়েকটি গানের তালিকা। আর সেখানে দেখা যায়, রয়েছে অরিজিতের গাওয়া তিনটি গান।
সদ্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি টুইটে জানান ২০২২ সালে তাঁর পছন্দের গানের তালিকা। তালিকায় যেমন রয়েছে ‘বেলা চাও’, তেমনই রয়েছে ‘পয়েন্টলেস’ গানটিও। তবে চমকপ্রদভাবে সকলের নজর কেড়েছে এই গানের তালিকায় অন্য একটি বিষয়। অভিষেক নিজের পছন্দের যে গানের তালিকা রেখেছেন তাতে রয়েছে অরিজিৎ সিংয়ের গাওয়া ৩ টি গান। অরিজিতের গাওয়া ‘অবশেষে’, ‘কেসরিয়া’ ,‘অটক গ্যায়া’ গানগুলি রয়েছে অভিষেকের প্রিয় গানের তালিকায়। তালিকার মধ্যে যেমন রয়েছে ‘কেসরিয়া’ তেমনই আবার রয়েছে 'বেশরম রং' গানটিও। উল্লেখ্য, ‘বেশরম রং’ গানটি নিয়ে সদ্য বিজেপির তরফে ব্যাপক প্রতিবাদ দেখা যায়। অন্যদিকে, 'কেসরিয়া' গানটিতে উঠে আসছে গেরুয়া রঙের প্রসঙ্গ। আর এই দুটি গানই ঠাঁই পেয়েছে অভিষেকের প্রিয় গানের তালিকায়।
উল্লেখ্য, গেরুয়া রঙের নিরিখে রাজনৈতিক দিক থেকে বিজেপির নাম বারবার উঠে আসে। সেই নিরিখেই কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে অরিজিতের গাওয়া ‘রং দে তু মোহে গেরুয়া’ গানটি নিয়ে নানান আলোচনা শুরু হয়। এরপর অরিজিতের গানের কনসার্ট বাতিল হতেি বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, ‘পাকিস্তানের গুলাম আলি এলে সঙ্গীতের কোনও সীমানা থাকে না। কিন্তু হিন্দুস্তানি অরিজিত সিংয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টা আলাদা’। টুইটে হ্যাশট্যাগ দিয়ে শুভেন্দু লেখেন, ‘রং দেতু মোহে গেরুয়া’।
এদিকে গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে তৃণমূল। শাসকদলের তরফে কুণাল ঘোষ এক টুইটে দাবি করেছেন, ‘ রং দে তু মোহে গেরুয়া’ গানের জন্য অরিজিতের কনসার্ট বাতিল হয়েছে কলকাতায় এমন দাবি একেবারেই ঠিক নয়। তিনি জানান, অরিজিত গেরুয়া গেয়েছেন ১৫ ডিসেম্বর। আর তার আগেই ৮ ডিসেম্বর কনসার্ট বাতিলের জন্য আগাম জমা রাখা ৫ লাখ টাকা ফেরত গিয়েছে। ফলে দুটি ঘটনার কোনও সংযোগ নেই বলে দাবি তৃণমূলের। তারপরই অভিষেকের এই টুইট আসার পর ইস্যুটি ফের কাড়ছে নজর।