কমপক্ষে ১৯ মহিলাকে হত্যা এবং তাঁদের মধ্যে দুই জনকে ধর্ষণের দায়ে ‘চেনম্যান’ কামরুজ্জামান সরকারকে (৩৮) ফাঁসির আদেশ দিল আদালত। সোমবার অভিযুক্তকে প্রাণদণ্ডাদেশ দেয় পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালত।
এ দিন জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘২০১৯ সালের মে মাসে ১৬ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার অপরাধে কামরুজ্জামান সরকারকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। তাকে ওই বছরের ২ জুন গ্রেফতার করা হয়েছিল।’
জানা গিয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে লাল রঙের একটি মোটরবাইকের আরোহীকে দাঁড় করিয়ে নথিপত্র করার সময় সিভিক ভলান্টিয়ারদের হাত থেকে পালাতে গিয়ে মোটরবাইক উলটে পড়ে যায় কামরুজ্জামান। তখনই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, কামরুজ্জামানকে পূর্ব বর্ধমান এবং হুগলি জেলায় মোট ১৫টি হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। এর মধ্যে দুটি ধর্ষণ ও খুনের মামলা, ৭টি হত্যাকাণ্ড এবং ৬টি খুনের চেষ্টার মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। কয়েকটি মামলায় তার বিরুদ্ধে লুঠতরাজের অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে অপরাধগুলি সংগঠিত হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কামরুজ্জামানের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচা সাক্ষীরা জানিয়েছেন, প্রতিবারই বিদ্যুৎ বিভাগের আধিকারিকের ভেক ধরে বাড়িতে প্রবেশ করেছিল অপরাধী। দুপুরে যখন বাড়ির পুরুষরা কাজে বাইরে থাকতেন, সেই সময় চড়াও হত ঘাতক। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধাতব শিকলের সাহায্যে শিকারের গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের কৌশল আয়ত্ত করেছিল ‘চেনম্যান’।
আদতে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা কামরুজ্জামান পূর্ব বর্ধমানে তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ের সঙ্গে বাস করত। সে ছাঁট লোহার ব্যবসা করত বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশি জেরার মুখে সে কবুল করে, কুসংস্কারের বশেই তার পতন হয়েছিল। পুলিশের দাবি, এক জ্যোতিষীর কাছে সে শুনেছিল যে, লাল রং তার পক্ষে শুভ। এই কারণে সে লাল রঙের মোটরবাইক কিনেছিল, লাল হেলমেট ব্যবহার করত। তার ফাঁস থেকে কয়েকজন মহিলা পালাতে পারলেও তাই রক্তের প্রতি আসক্তি তাকে একের পর এক খুনে প্রবৃত্ত করেছিল বলে জেরায় গোয়েন্দাদের জানিয়েছে কামরুজ্জামান।
নয় ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ কামরুজ্জামানের জন্ম ১৯৮২ সালে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে মা মারা গেলে তার বাবা ফের বিয়ে করেন। এই নিয়ে পরিবারে অশান্তির