ইয়াস চলে গিয়েছে। লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। মাথার উপর একচিলতে চাল সেটাও উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে বিধ্বংসী ঝড়। তবুও দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য জীবনযুদ্ধ থেমে নেই এতটুকু। ঝড়়ের সঙ্গে লড়াই করা মানুষগুলো মঙ্গলবার একেবারে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলেন। বাঘের হানায় প্রাণ গেল এক বধূর। তবে সেই বাঘের মুখ থেকে স্ত্রীকে বাঁচাতে টানা লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন স্বামী। কিন্তু তবুও শেষরক্ষা হয়নি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্য়ু হয়েছে স্ত্রীর।মৃত মহিলার নাম ভগবতী মণ্ডল। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সজনেখালি রেঞ্জের জঙ্গলের গোলভক্সা খালেই কাঁকড়া ধরতে গিয়ে মঙ্গলবার সকালে প্রাণ গেল ৩৮ বছর বয়সী ওই বধূর।
ঠিক কী হয়েছিল এদিন? স্থানীয় সূত্রে খবর, গোসাবা ব্লকের লাহিড়িপুরের চরঘেরা গ্রামে তাঁদের বাড়ি। সুন্দরবনের খাল বিলে মাছ, কাঁকড়া ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা। অন্য়ান্য দিনের মতোই স্বামী ও প্রতিবেশী মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে ভোর ভোর খালের দিকে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। চারদিকে জঙ্গল। বিপদের হাতছানি। সেখানেই দূরে খালের ধারে একটি বাঘকে পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। এদিকে বাঘটি মারা গিয়েছে ধরে নিয়ে নিজেদের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তারা। কখন যে চরের কাছাকাছি চলে গিয়েছে খেয়াল ছিল না। আচমকাই বাঘটি ঝাঁপিয়ে পড়ে ভগবতীর উপর। স্ত্রীকে বাঁচাতে বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন স্বামী অতীন। বাঘে মানুষে মরণপন লড়াই। একটা সময় বধূকে ছেড়ে দিয়ে বাঘ জঙ্গলে চলে। কিন্তু ততক্ষণে বাঘের কামড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ভগবতী। এরপর মৃত স্ত্রীকে নৌকায় চাপিয়ে গ্রামে ফেরেন স্বামী। একে তো ঝড় কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু। এবার বাঘের হানা কেড়ে নিলে বধূর প্রাণ। একেবারে শোকে কাতর গোটা গ্রাম।