ভিনরাজ্যে গিয়ে ফের মৃত্যু হল বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিকের। তবে এক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নয়, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ওই পরিযায়ী শ্রমিক। যদিও এই ঘটনাকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে মানতে নারাজ মৃতের পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি, তাকে খুন করা হয়েছে। ওই শ্রমিকের নাম সাদেকুল শেখ (১৯)। মুর্শিদাবাদের ফারাক্কার অর্জুনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবনগরের বাসিন্দা সাদেকুল। ওড়িশার কুন্দ্রায় রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিল ওই পরিযায়ী শ্রমিক। সোমবার দুপুরে ওই পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ উদ্ধার হয়। এরপরে তাকে ভুবনেশ্বরের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তার দেহ ফারাক্কার বাড়িতে নিয়ে আসা হবে।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে ক্রেন দুর্ঘটনায় মৃত জলপাইগুড়ির ৪ যুবক, ফিরছে কফিন বন্দি দেহ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাদেকুলের বাবার নাম শুকুর্দি শেখ। বছরখানেক আগে শামশেরগঞ্জের ধুলিয়ানে তার বিয়ে হয়েছে। জানা গিয়েছে, ২৫ দিন আগে সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিল সাদেকুল। সেখানে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ভবনে নির্মাণের কাজ করছিল। তার স্ত্রী রেশমা খাতুন বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গিয়েছে। যদিও কী কারণে আত্মহত্যা তা জানা যায়নি। তবে পরিবারের দাবি, রেশমার সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে সাদেকুলের ঝামেলা হয়েছিল। তারপরে ফোন কেটে সুইচ অফ করে রেখে দেয় সাদেকুল। পরের দিন পরিবারের সদস্যরা তার মৃত্যুর খবর জানতে পারেন। সাদেকুলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কুন্দ্রা থানার পুলিশ। তারা মৃতদেহ ময়নতদন্ত্রের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। সাদেকুলের মা আনোয়ারের বিবি দাবি করেন, ছবিতে দেখা গিয়েছে গলায় গামছা জড়ানো অবস্থায় ছিল সাদেকুল। তার পা দুটো মাটিতে ঠেকে ছিল। ফলে তাকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। যদিও এটিকে আত্মহত্যা বলে মনে করছে পুলিশ। তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে কুন্দ্রা থানার পুলিশ।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে মৃত্যু হয়েছে ফারাক্কার এক পরিযায়ী শ্রমিকের। ওই পরিযায়ী শ্রমিকের নাম প্রতুল মণ্ডল। তিনিও নির্মাণ কাজে তিনমাস আগে উত্তর প্রদেশে গিয়েছিলেন। খেতে বেরিয়ে রাস্তায় একটি গাড়ির ধাক্কায় তিনি আহত হন। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই তার মৃত্যু হয়। তারও কিছুদিন আগে গাজিয়াবাদে বিদ্যুৎকৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ৩ পরিযায়ী শ্রমিকের। যার মধ্যে একজন ফারাক্কার বাসিন্দা। প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাসের মধ্যে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।