সাধারণত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কখনও ‘মা সারদা’ আবার কখনও ‘মা দুর্গা’র সঙ্গে তুলনা করে থাকেন তৃণমূলের নেতারা। কিন্তু, এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মা দুর্গার সঙ্গে তুলনা করে বিতর্কে জড়ালেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিধান রায়। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। একজন জেলা শাসকের এমন মন্তব্যকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের রাজনীতিতে। এর তীব্র নিন্দা করে অবিলম্বে জেলাশাসকের বদলির দাবি জানিয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: কোনও জমি নষ্ট হবে না! অব্যবহৃত জায়গায় নয়া শিল্প গড়ে তুলবে রাজ্য, তৈরি ‘ব্যাঙ্ক’
শুক্রবার বর্ধমান শহরের স্পন্দন কমপ্লেক্স মাঠে জেলার সৃষ্টিশ্রী মেলায় উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিধান রায়। এছাড়াও ছিলেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা এবং জেলা প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকরা। সেখানে স্বনির্ভর গোষ্ঠী সম্পর্কে উপস্থিত মহিলাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলাশাসক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মা দুর্গার সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখমন্ত্রী তিনি একজন মহিলা। তিনি মা দুর্গার মতো সমস্ত দিকেই সাফল্যের সঙ্গে কার্যক্রম করে আসছেন। আমি আপনাদের বলব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যদি তিনি মা দুর্গার মতো কাজ করতে পারেন তাহলে আপনারা কেন পারবেন না? একটা জ্বলন্ত উদাহরণ আছে আপনাদের কাছে। আমি অনুরোধ করবো উদাহরণকে সামনে রেখে আপনারা এগিয়ে চলুন।’
জেলাশাসকের এমন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছে বিজেপি। পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রশাসনিক আধিকারিক এবং পুলিশ অফিসারকে তৃণমূল নেতাদের মতো আচরণ করতে দেখা যাচ্ছে। আমলা, পুলিশ অফিসাররা যে তৃণমূল নেতাদের অঙ্গুলিহিলনেই চলেন তার আরও একটি প্রমাণ পাওয়া গেল। জেলাশাসক একজন প্রশাসনিক আধিকারিক। তাঁর নিরপেক্ষভাবে কথা বলা এবং কাজ করা উচিত। কিন্তু, তিনি যে মন্তব্য করলেন এরপর ওনার নিরপেক্ষতা নিয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে প্রশ্ন তুলছি। সামনে লোকসভা নির্বাচন। ফলে উনি নিরপেক্ষতা নিয়ে ভোট করতে পারবেন না বলেই মনে হচ্ছে।’ বিজেপির পক্ষ থেকে এই মন্তব্যে বিরোধিতা করে দ্রুত জেলাশাসককে বদলি করার আবেদন জানান তিনি।
এর পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমানে স্বনির্ভর গোষ্ঠী সাফল্যের কথা তুলে ধরতে গিয়ে জেলাশাসক বলেন, ‘আমার যতদুর জানা আছে যে পরিসংখ্যানের নিরিখে এখানে পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় ৭০হাজারের মতো স্বনির্ভর দল গঠন করা হয়েছে। প্রায় ৭ লক্ষ মানুষ এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। এটা আমাদের একটা শক্তি।’ পরিসংখ্যান পেশ করে জেলা শাসক বলেন, ‘এই আর্থিক বছরে (২০২৩-২৪) স্বনির্ভর দল গঠনের লক্ষ্যমাত্রা ১,৭০০। আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা ১,৮৮০ কোটি টাকার মতো। আমরা ১৩০০-১৩৫০ দল গঠন করে ফেলেছি। যদি নারী ও পুরুষ উভয়েই শক্তিশালী না হয়, তাহলে আর্থিক বা সামাজিকভাবে সমাজ শক্তিশালী হতে পারে না।’