যাবো বললেই কি আর যাওয়া যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয়তো যাওয়া যায় না। আসলে অতীতের স্মৃতি থেকে শুরু করে পিছুটান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। প্রায় এমনই ঘটনা ঘটেছে বিজেপি নেতা প্রলয় পালের জীবনে। সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনীতিকে ভাল থেকো বলে বিদায় ঘোষণা করেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের এই নেতা। তবে সময় লাগলেও পুরনো পথেই হাঁটলেন তিনি। অর্থাৎ বিজেপিতেই থাকছেন প্রলয় পাল। তাই বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ–সভাপতি প্রলয় পাল বললেন, ‘আমি রাজনীতিতেই আছি, রাজনীতিই করব, বিজেপিই করব’। এই ঘটনার পর অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, তাহলে লোক হাসালেন কেন?
এদিকে মাঝে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার টানাপোড়েন। শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে রাজনীতি এবং দল ছাড়ার কথা বলেছিলেন। আর রবিবার বললেন, ‘আমি রাজনীতিই করব।’ তাহলে কি রফা হয়ে গেল? এমন প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। তবে সব শেষে এটা বলা যাচ্ছে, বিজেপিতে ‘আবার প্রলয়’। কারণ ইতিমধ্যেই আগের ফেসবুক পোস্ট তিনি ফিরিয়ে নিয়েছেন। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে ফিরে আসার কারণ হিসাবে বলেন, ‘নিচুতলার কর্মীদের আন্তরিকতা এবং ভালবাসার জন্যই আবার সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে এলাম। এভাবে দলের ক্ষতি দেখার চেয়ে বোধহয় মৃত্যু অনেক ভাল। আবেগপ্রবণ হয়েই পোস্ট করেছিলাম। কিন্তু যেভাবে দলের কর্মীরা ফোন করেছেন, তাঁদের সেই অনুরোধ আমি ফেলতে পারিনি।’
অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জুড়ে লোকে হাসাহাসি করছেন। অনেকে বলছেন বাড়তি কিছুর দরকার ছিল সেটা পেয়ে যেতেই ঘরের ছেলে ঘরে ফিরল। তবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রলয়ের বক্তব্য, ‘নিজের ভাবনা থেকেই এই পোস্ট করেছিলাম। কর্মীদের কাছ থেকে ভালোবাসা ও তাঁদের কথা ভেবে আমি রাজনীতি ছাড়ছি না। কর্মীদের কথা ভেবে আমি সরে যেতে পারিনি। পদের জন্য আমি রাজনীতি করতে আসিনি। কর্মীদের কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম।’ এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের পিছনে শুভেন্দু অধিকারীর কলকাঠি আছে বলে অনেকে মনে করেন। যদিও এই বিষয়ে বিরোধী দলনেতার কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুন: আবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন রাজ্যপাল, এবার কোন কথা জানালেন?
তাছাড়া রাজনীতি থেকে প্রলয়ের বিদায়ের কথা জানাজানি হতেই সক্রিয় হয়ে ওঠে বিজেপির রাজ্য দফতর। তারপরই গোটা পরিস্থিতি কমব্যাট করতে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগলেও আবার বিজেপিতেই প্রলয় ফিরলেন। তবে প্রলয়ের কথায, ‘দল আমায় যখন যে পদ দিয়েছে সেই পদে আসীন হয়েছি। চেষ্টা করেছি দলকে ১০০ শতাংশ দিতে। নন্দীগ্রামে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আমি নিজেই। যখন এখানে ২ শতাংশ মানুষ বিজেপি করতেন তখন থেকেই আমি এই দলের সঙ্গে যুক্ত। আমার বাবা তৃণমূল পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। আমি তখন তাঁদের যোগদান করিয়েছিলাম বিজেপিতে। তাই ওইসব নিয়ে আমি ভাবি না। দল যা মনে করেছে তেমনটাই হয়েছে।’ একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় রাজ্য রাজনীতির শিরোনামে উঠে আসেন প্রলয় পাল।