এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজের গড়েই ভরাডুবি হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর গড়ে পরাজয় মেনে নিতে পারেননি। বরং এখন এলাকায় হেও হচ্ছেন তিনি। তাই এবার প্রকাশ্যে রেগে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের পতনের ডেডলাইন ঘোষণা করে দিলেন তিনি। এর আগে তাঁর দলের সহকর্মীরা এমন ডেডলাইন ঘোষণা করে বিপাকে পড়েছিলেন। এবার তিনিও সেই পথে হাঁটলেন। হ্যাঁ, তিনি বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সর্বত্র সবুজ ঝড় দেখা গিয়েছে। মতুয়া ভোট বিভক্ত হয়ে পড়ায় রেগে গিয়ে শান্তনু ঠাকুর সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে রাজ্যে তৃণমূলের সরকার পড়ে যাবে।’
এদিকে ইতিমধ্যেই পরাজয়ের গ্লানি সহ্য করতে না পেরে সুকান্ত–শুভেন্দুরা বাংলায় ৩৫৫ ধারা জারির চেষ্টা করছেন। সে কথা প্রকাশ্যে বলছেনও। এবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘বাংলায় শাসকদল যেভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন করিয়েছে তাতে গণতন্ত্র চলতে পারে না। তৃণমূল সন্ত্রাস না করলে বিজেপি ১০ গুণ বেশি ভোট পেত। এদের ভাবনা এরা চিরস্থায়ী। কিন্তু এরা চিরস্থায়ী নয়, আগামী ৫ মাসের মধ্যেই এদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।’ এখন থেকে পাঁচ মাস হিসাব করলে ‘ডিসেম্বর ডেডলাইন’ উঠে আসছে। তবে কেমন করে সরকার পড়বে তা বলেননি তিনি।
অন্যদিকে এই ডিসেম্বর ডেডলাইন আগে শোনা গিয়েছিল শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ–সহ অনেকের মুখে। তা পরে ঘটতে দেখা তো গেলই না উলটে পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজেদের গড়ে ভরাডুবি দেখতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরের নেতা–মন্ত্রীকে। আর তা বিশ্লেষণে আজ, রবিবার বসেছে বিজেপির জরুরি বৈঠক। এবার তার মধ্যেই আবার শোনা গেল সরকার ফেলে দেওয়ার হুঁশিয়ারি। তাও সময়সীমা পাঁচ মাস। অর্থাৎ এখন দেখার বিষয, ডিসেম্বর ডেডলাইন হয় কিনা। ভবিষ্যদ্বাণী মেলে কিনা সেটাই দেখার। আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘৬ মাস পর তৃণমূল কংগ্রেস থাকবে না। তার আগেই ডিসেম্বরের মধ্যে ঝাঁপ গুটিয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত স্তরে নয়া ভাবনা তৃণমূল কংগ্রেসের, ত্রিস্তরেই থাকছে নবীকরণ পদ্ধতি
তাছাড়া পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর জরুরি তলবে নয়াদিল্লি গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তারপর সেখান থেকে ফিরেই ৩৫৫ ধারা কার্যকরের ইন্ধন উসকে দেন। তার মধ্যেই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের ডিসেম্বর ডেডলাইন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তবে সুকান্ত মজুমদার আগে বলেছিলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর চিন্তা বিজেপি। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিন্তাতেই রাখব। চিন্তার কিছু নেই। ডিসেম্বর হোক, জানুয়ারি হোক, ফেব্রুয়ারি হোক, ঠান্ডাও পড়বে, সরকার কাঁপবে।’ দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘এই সরকারের কোনও ভরসা নেই। পদ্মপাতায় জলের মতো। এই আছে, এই নেই।’