মৌসুনি দ্বীপে অবৈধ পথে গড়ে উঠছে হোটেল–রিসর্ট। এমনই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। আর সেই অভিযোগের পরিপ্রক্ষিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। এই দ্বীপ বেশ কয়েকবছর ধরে পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেই সুবাদে কোনও আইন না মেনে এই নামখানার মৌসুনি দ্বীপে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে হোটেল–রিসর্ট। আর এই অবৈধভাবে তৈরি হওয়া হোটেল–রিসর্ট নিয়েই হলফনামা তলব করল আদালত।
এদিকে নামখানার মৌসুনি দ্বীপ উপকূলে অবস্থান করছে। তাই উপকূলের আইন মানা উচিত। কিন্তু সেই উপকূল আইনকে তুরি মেরে উড়িয়ে দিয়ে হোটেল–রিসর্ট তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই বিষয়টি চোখে পড়তেই বিজেপি নেতা ইন্দ্রলাল প্রামাণিক সোজা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। আর নিজের হলফনামায় উল্লেখ করেন, মৌসুনি দ্বীপের বারোশালা এলাকার নদীর চরের ২০০ মিটারের মধ্যে একটি অবৈধ রিসর্ট গড়ে উঠেছে। এই মামলা চলাকালীন একই অভিযোগ তুলে আরও কয়েকটি মামলা হয়। তাতে মোট ৪২টি রিসর্টের কথা উল্লেখ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: ইঞ্জেকশনের ভায়ালের মধ্যে ছত্রাক! শিশুকে দিতে গিয়ে চমকে উঠলেন নার্স এনআরএস হাসপাতালে
অন্যদিকে এভাবে অবৈধ পথে হোটেল–রিসর্ট গড়ে উঠলে বনাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই মামলা করা হয়। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের কাছে গোটা বিষয়টি নিয়ে হলফনামা তলব করেন। এমনকী বিচারপতি ২৪ জুনের মধ্যে মৌসুনি দ্বীপে গিয়ে গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন জেলাশাসককে। ৪২টি রিসর্টের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। আর রিসর্টগুলি তৈরি করার ক্ষেত্রে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তবে জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেছেন, ‘আদালতের নির্দেশের কপি এখনও হাতে আসেনি। তা এলে আমরা এলাকায় গিয়ে তদন্ত করব। আর সবটা খতিয়ে দেখে কলকাতা হাইকোর্টকে জানাব।’
এছাড়া এই দ্বীপ নিয়ে এখন জোর চর্চা হতে শুরু করেছে। কারণ চলতি বছরের বর্ষায় পর্যটকরা এখানে ভিড় জমাবেন। তাঁরা যাতে বিপদে না পড়েন সেটা দেখাই মূল লক্ষ্য। তাই মৌসুনি পঞ্চায়েতের প্রধান মানসী ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘দ্বীপ এলাকায় যে সমস্ত হোটেল–রিসর্ট গড়ে উঠেছে সেগুলির অনুমতি আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। প্রত্যেকে পঞ্চায়েত থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে। বাকি অনুমতি আমরা দিতে পারি না।’ এটা সুন্দরবন এলাকায় পড়ে। আর এই এলাকায় ভাঙন দেখা যায়। তাই অবৈধ উপায়ে হোটেল–রিসর্ট গজিয়ে উঠলে চাপ বাড়বে। তাই আইন ও বিধি কার্যকর করা হয়েছে। এটাই অনেকে মানছেন না বলে অভিযোগ।