দুই দলই যুযুধান প্রতিপক্ষ। একজনকে ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত করেই আর একজন ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন। ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া দলের ঝান্ডা লাল। আর যে দল ক্ষমতায় আছে তাদের পতাকা ঘাসফুল। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে এখানে তৃণমূল কংগ্রেস এবং সিপিএমের কথা বলা হচ্ছে। এবার তাদের একইসঙ্গে একই মিছিলে হাঁটতে দেখল শহরতলির মানুষজন। শুধু তাই নয়, ওই মিছিল থেকে স্লোগান উঠল— ‘ইনক্লাব জিন্দাবাদ’। আর ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনিও। আজ, বুধবার দুপুরে এমনই এক বিরল দৃশ্য দেখা গেল সোদপুর স্টেশন চত্বরে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? এদিন হকার উচ্ছেদের প্রতিবাদে একসঙ্গে প্রতিবাদে সামিল পা মেলালেন দুই দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। লাল ঝান্ডা আর জোড়াফুলের ঝান্ডা দেদার উড়তে শুরু করল একসঙ্গে। একই মিছিলে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করল সিটু এবং আইএনটিটিইউসি। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই ঘটেছে বাস্তবে। গোটা সোদপুর স্টেশনের মানুষজন এই মিছিলের প্রত্যক্ষদর্শী। আসলে এটা ইন্ডিয়া জোট গড়ে ওঠার পর এমন মিছিল প্রথম। সম্প্রতি মমতা–অভিষেক, সেলিম–অধীরের পোস্টার দেখেছিল রাজ্যবাসী। তা নিয়ে চর্চাও হয়েছিল বিস্তর।
তারপর ঠিক কী ঘটল? সর্বভারতীয় রাজনীতিতে এখন ইন্ডিয়া জোট বিজেপির কপালে ভাঁজ ফেলেছে। তারপর বাংলার মাটিতে সিপিএম–তৃণমূল কংগ্রেসের একসঙ্গে মিছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এখন সোদপুর স্টেশনের এই দৃশ্যে স্বাভাবিকভাবেই চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। যদিও এই বিষয়টি নিয়ে আলিমুদ্দিনের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে আগে সুজন চক্রবর্তী, মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য ছিল, বাংলায় তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখবে। ইন্ডিয়া জোটের সমন্বয় কমিটিতে বামেদের কোনও প্রতিনিধি না রাখার সিদ্ধান্তের পরও এমন মিছিল চর্চায় তো উঠে আসবেই। সোদপুর স্টেশনে একসঙ্গে মিছিল তাই চোখ মেলে দেখলেন বঙ্গবাসী। আরও কিছু পরে ঘটতে পারে।
আরও পড়ুন: একদিনের বৃষ্টিতে ২৫০ পরিবার ঘরছাড়া, মালদায় গাছের নীচে আশ্রয় গর্ভবতী মহিলার
ঠিক কে, কি বলছেন? এই মিছিল দেখে যখন চারিদিকে চর্চা শুরু হয়েছে তখন দুই দলের শ্রমিক সংগঠন তার ব্যাখ্যা দিয়েছে। এই বিষয়ে সিটু নেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটি আইএনটিটিইউসি ও সিটুর যৌথ কর্মসূচি। সম্প্রতি সোদপুর স্টেশনে একটি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল হকার উচ্ছেদ নিয়ে। তাই সব হকারদের সঙ্গে আলোচনা করে এই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’ পুনর্বাসন ছাড়া কোনও হকারকে উচ্ছেদ করা যাবে না বলে দাবি আইএনটিটিইউসি নেতা প্রবীর পালের। তাঁরও বক্তব্য, ‘হকারদের রুজি–রোজগারের জন্য আইএনটিটিইউসি–সিটুর যৌথ আন্দোলন চলবে।’ তবে চটেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা জয় সাহা বলেন, ‘তৃণমূল তো সিপিএমেরই বি–টিম। সিপিএম ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর ওদের একাংশ তৃণমূলের এজেন্ট হয়েছে। এটা নতুন কিছু নয়। ফিশ ফ্রাই সেটিং মানুষ আগেই দেখেছে।’