নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে বানভাসী পরিস্থিতি তৈরি হল মালদার বামনগোলা ব্লকের গোবিন্দপুর মহেশপুর অঞ্চলের সাপমারি এবং ডুবা পাড়া এলাকা। এখানে একদিনের বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাই বাড়ি–ঘর ছেড়ে মানুষজন এখন অন্যত্র আশ্রয় খুঁজছেন। পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ আকার নিয়েছে যে, ঘরছাড়া হয়েছেন প্রায় ২৫০টি পরিবার। বাড়ি–ঘর সব এখন জলের তলায়। এই পরিস্থিতিতে অস্থায়ী ক্যাম্প করা হয়েছে এলাকার এক স্কুলে। কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত পরিষেবা মেলেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে সাপমারি এবং দুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দারা বাড়ি–ঘর ছেড়ে সকাল থেকেই পলাশবাড়ি হাইস্কুলের সামনে জড়ো হয়েছেন। এখানেই দেখা গিয়েছে জীবনের কঠিন দৃশ্য। অসুস্থ রোগী থেকে শুরু করে গর্ভবতী মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা একটি আম গাছের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন। এই ঘটনা দেখে সবাই শিউরে উঠছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কাছে মানুষ যে অসহায় সেটা আবার প্রমাণিত হল। আতঙ্কের মধ্যে আছেন এলাকাবাসী। এখানে অভিযোগ সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও এখনও মেলেনি অস্থায়ী ক্যাম্পের ঘর। মাথা গোঁজার আশ্রয়টুকু নেই বলে অনেকে অভিযোগ করছেন।
অন্যদিকে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে প্রশাসনের ওপর ক্ষোভ উপরে দিয়েছেন এলাকাবাসী। চারিদিকে বানভাসী পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে খেতে না পাওয়ার হাহাকার। পরে কিছু কিছু খাবার মিললেও সেটা আধপেটা রয়ে গিয়েছে। গাছের তলায় গর্ভবতী মহিলার আশ্রয়ের কথা এখন চারিদিকে চাউর হয়ে গিয়েছে। আতঙ্ক তৈরি হয়েছে কিছু হলে কি হবে! এখনও তাঁদের অস্থায়ী ক্যাম্পের ঘর মেলেনি বলে অভিযোগ। ঘর না পেয়ে রাস্তায় গাছের নীচে বসে রয়েছেন বহু মানুষজন। সেখান থেকেই বারবার ফোন করা হচ্ছে বিডিও অফিসে। আর বিডিও অফিস থেকে বলা হচ্ছে, দেখছি। ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন মালদার বামনগোলা ব্লকের বানভাসী মানুষজন। এখনও তাঁদের অস্থায়ী ত্রাণ শিবির মেলেনি বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বিনিয়োগ নিয়ে কাজ শুরু নবান্নের, পাখির চোখ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন
আর কী তথ্য মিলছে? আবার বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। মেঘ ঢেকেছে আকাশ। এবার যদি বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ে তাহলে দুর্গতির শেষ থাকবে না। কারণ এমনিতেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে গ্রামের মানুষজন সহায়সম্বলহীন হয়ে পড়েছেন। তার সঙ্গে পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে বেঁচে থাকার আশাটাও থাকবে না। এই বিষয়ে এলাকা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য উদয় দাস বলেন, ‘আমরা সকাল থেকে এই ২৫০টি পরিবারকে নিয়ে স্কুলের সামনে গাছের নীচে বসে রয়েছি। এখনও ব্লক প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা করেনি। সারাদিন না খেয়ে সকলেই বসে রয়েছে। বিডিও অফিসে বারবার ফোন করা হলে জানানো হচ্ছে, দেখছি। এখনও কোনও ব্যবস্থা হয়নি।’