বোলপুরে রাঙাবিতানে সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়া–অধ্যাপকদের সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আগেই এসেছিলেন বোলপুরে। সেখানে এসে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে জমির কাগজ তুলে দেন। যা নিয়ে উপাচার্য সমস্যা তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ। জমিজট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পাশে থাকার আশ্বাস দেন অমর্ত্য সেনকে। তারপর আজ, মঙ্গলবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়া–অধ্যাপকদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা দিয়েছিলেন। মালদা থেকে ফিরে সেই কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? এদিন বৈঠক শেষে বিশ্বভারতীকে নিশানা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীরা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। পড়ুয়াদের পিএইচডি আটকে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বভারতীকে বাঁচানোর দায়িত্ব আমাদের সকলের। আমি নিজে ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে আসা লোক। আন্দোলনই আমাকে উন্নয়ন করতে শিখিয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে আমার মনে হয়েছে, কারও কারও মস্তিষ্কে হৃদয়টাই নেই। মস্তিষ্কে হৃদয় থাকলে এই কাজ করা যায় না।’ অর্থাৎ তিনি নাম না করে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের দিকেই আঙুল তুলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আর কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? আজ, মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রকৃত সমস্যা তিনি শোনেন ছাত্রছাত্রীদের মুখে এবং রীতিমতো অবাক হয়ে যান। তখন তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ছাত্রছাত্রী– সহ আরও অনেকের থেকেই বিষয়টি শুনেছি। ছাত্রীছাত্রীদের সাসপেন্ড করা হচ্ছে। অধ্যাপকদের চাকরি থেকে টার্মিনেট করা হচ্ছে। অশিক্ষক কর্মীদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। বিশ্বভারতী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জায়গা। আমরা গর্ববোধ করতাম। কিন্তু, আজ আমি যা শুনলাম তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
তারপর ঠিক কী করলেন মুখ্যমন্ত্রী? বিশ্বভারতীর পডু়য়া–অধ্যাপকদের সঙ্গে বৈঠক করার পর আশ্রমিকদেরও পাশে থাকার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পড়ুয়া থেকে শুরু করে অধ্যাপক, প্রাক্তনী, আশ্রমিক সবার সঙ্গেই আমাদের যোগাযোগ থাকবে। আমি চাই ছাত্রছাত্রীর পড়াশুনা করার সুযোগ পাক। একজন পড়ুয়া নিজের পিএইচডি শেষ করতে পারছে না। এক অধ্যাপককে চাকরি থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। যে ছাত্ররা আমার সঙ্গে দেখা করল তাদের সকলকে সাসপেন্ড করে দিয়েছে। পরীক্ষায় বসার জন্য ৬০ শতাংশ উপস্থিতি প্রয়োজন। অনেককে ইচ্ছে করে অ্যাটেনডেন্স দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্বভারতীকে বাঁচানোর দায়িত্ব সবার। যদি কেউ মনে করেন ক্ষমতার জোরে বিশ্বভারতীয় পড়ুয়া, অধ্যাপক বা কর্মীদের পিষে দেবেন তাহলে মনে রাখবেন কেউ পাশে না থাকলেও আমি আছি।’