পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে অপহরণ করা হয় কংগ্রেসের জয়ী পঞ্চায়েত প্রার্থীকে। অভিযোগ, অপহরণ করে তৃণমূল। যদিও এই অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। খোদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর খাসতালুকে এমন ঘটনা ঘটেছিল বলে খবর। এমনকী পরে ‘অপহরণ’ কাহিনী শেষ হয়ে যায়। ওই অপহৃত কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থীকে দেখা গেল, নিজেই গিয়ে যোগ দিলেন তৃণমূলে। সুতরাং কংগ্রেসের দু’দিক দিয়ে ক্ষতি হয়ে গেল জয়ী প্রার্থীও হাতছাড়া হল আবার তৃণমূলের হাত শক্ত হল।
এদিকে মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস নেতারা একদিন আগেই দাবি করেন, মণীন্দ্রনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থী সৌমেন সরকারকে অপহরণ করা হয়েছে। এমনকী থানায় অপহরণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অপহৃত কংগ্রেস প্রার্থীকে উদ্ধার করার দাবিতে থানা ঘেরাও হয়। প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারপরই দেখা গেল ভয়ঙ্কর খেলা। আজ, শুক্রবার বহরমপুরের তৃণমূলের কার্যালয়ে গিয়ে যোগ দেন তিনি। আর তখনই অপহরণের তত্ত্ব খারিজ করে সৌমেন সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, ‘অপহরণ নয় মতাদর্শের পরিবর্তন হয়েছে। তাই তৃণমূলে যোগ দিলাম।’
অন্যদিকে কংগ্রেস নেতৃত্ব দাবি করেছেন, সৌমেন সরকারকে ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানো হয়েছে। পাল্টা মুর্শিদাবাদ তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘যিনি অপহৃত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে, তিনি স্বয়ং বলছেন স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। হাস্যকর নাটক করে কংগ্রেস নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে।’ এই মন্তব্য সহ্য করতে নারাজ কংগ্রেসও। তাই কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীর কথায়, ‘অপহরণ করে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে সৌমেনকে।’
আরও পড়ুন: ‘এটা বিচারব্যবস্থার জয়’, রাহুল গান্ধীর সাজার উপর স্থগিতাদেশ দিতেই টুইট মমতার
আর কী জানা যাচ্ছে? কয়েকদিনের মধ্যেই পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের পালা শেষ হবে। ঠিক তখনই কংগ্রেসের খাসতালুকে ভয়ঙ্কর খেলা হয়ে গেল। কারণ বহরমপুরের এই মণীন্দ্রনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী সৌমেন সরকার এখন তৃণমূলে যোগ দিলেন। আর এখানে মোট আসন ৩০টি। তার মধ্যে এবার ১০টি আসন পেয়েছে তৃণমূল, ১০টি আসনে পেয়েছে বিজেপি এবং ৯টি আসন পেয়েছে কংগ্রেস। আর সৌমেন তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তা নেমে হল ৮টি। একটি আসন পেয়েছেন নির্দল প্রার্থী। আজ শুক্রবার কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থী তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এলেন ১১ জন। সুতরাং বোর্ড গঠন করতে অসুবিধা হবে না।