শো - কজের পর এবার কাঁথির তৃণমূলি পুরপ্রধান সুবল মান্নাকে পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলল তৃণমূল। শিশির অধিকারীকে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক গুরু বলে ঘোষণা করায় আগেই তাঁকে শো-কজ করেছিল তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা। শো - কজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাঁকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুবলবাবুর জায়গায় কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধান হতে চলেছেন কারামন্ত্রী অখিল গিরির পুত্র সুপ্রকাশ গিরি।
গত বৃহস্পতিবার কাঁথি ১ ব্লকের সাহবাজপুটে একটি বেসরকারি স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে হাজির ছিলেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ সাংসদ শিশির অধিকারী ও কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধান সুবল মান্না। সেই মঞ্চেই প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের সময় শিশিরবাবু সুবল মান্নাকে পাশে ডেকে নেন। এর পর সুবলবাবু মঞ্চেই প্রবীণ এই রাজনীতিককে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন। নিজের বক্তব্যের সময় শিশিরবাবুকে নিজের রাজনৈতিক গুরু বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, জন্ম দিয়েছেন পিতামাতা ঠিকই। কিন্তু যিনি পথ দেখিয়েছেন,যার জন্যে আজ আমি এখানে, সেই রাজনৈতিক গুরু শিশির অধিকারীকে প্রণাম জানাই।
তৃণমূলি পঞ্চায়েত প্রধানের এই বক্তব্যের ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই অস্বস্তিতে পড়ে দল। তার জেরেই তাঁকে শো কজের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা তৃণমূল। ওদিকে শুরু হয় তাঁকে পদ থেকে সরানোর তোড়জোড়।
তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, সুবলবাবু কাঁথি পুরসভায় একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন। কাউন্সিলরদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো নয়। ওদিকে শো কজের জবাব দেননি সুবলবাবু। তিনি বলেন, আমি কোনও চিঠি পাইনি। কোনও চিঠি পেলে আমি পদক্ষেপ করব। অনেক পরীক্ষা দিয়েছি, দিতে হবে। দল ভাবছে। আমি দলের অনুগত সৈনিক। এর পরই তাঁকে দলের তরফে পুরপ্রধান পদে ইস্তফা দিতে বলা হয়। শিশির অধিকারীকে নিয়ে মন্তব্যের জন্যই যে সুবলকে পদ থেকে সরানো হয়েছে এব্যাপারে কোনও রাখঢাক করেনি তৃণমূল।
ওদিকে সুবল মান্নার মন্তব্য নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তাদের একাংশের দাবি, লোকসভা ভোটের মুখে বিজেপিতে নাম লেখাতে চাইছেন সুবলবাবু। প্রথম দিন থেকে অধিকারী পরিবারের ছত্রছায়ায় রাজনীতি করে অন্যদের নেতৃত্ব মেনে নিতে সমস্যা হচ্ছে তাঁর। সেজন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে।