গত ২৯ অগস্ট রানাঘাটে সেনকো গোল্ডের আউটলেটে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে ডাকাতদলের রুদ্ধশ্বাস গুলির লড়াইয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল গোটা রাজ্যে। অবশেষে সেই ঘটনার পাঁচ মাসের মধ্যে সাজা ঘোষণা করল আদালত। ঘটনায় ধৃত ৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল রানাঘাট ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক মনোদ্বীপ দাস। তবে অপরাধীরা নিজেদের নির্দোষ বলেই দাবি করেছে।
আরও পড়ুন: দুষ্কৃতী–পুলিশের গুলির লড়াইয়ে নায়ক এএসআই, সাহসিকতায় মুগ্ধ রানাঘাটবাসী
গত ২৯ অগস্ট নদিয়ার রানাঘাট ও পুরুলিয়ায় একই দিনে একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল সেনকো গোল্ডের আউটলেটে। পুরুলিয়ার ঘটনায় ডাকাত দল পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও রানাঘাটে ডাকাতদল সোনার আউটলেট থেকে বের হতেই পিছু ধাওয়া করেন রানাঘাট জেলা পুলিশের এএসআই রতন রায়। ডাকাতের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ চলে গুলির লড়াই। সেই দৃশ্য কার্যত সিনেমাকেও হার মানিয়ে দিয়েছিল। অকুতোভয় ওই অফিসারের গুলিতে ঘায়েল হয়েছিল ২ ডাকাত। তিনি যেভাবে একাই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে লড়াই করেছেন তাতে মুগ্ধ হয়েছিলেন রানাঘাটবাসী থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মী, আধিকারিকরা। এই ঘটনায় তদন্তে নেমে মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই ৪ জনের নাম হল কুন্দন কুমার যাদব, রাজু কুমার পাশওয়ান, ছোট্টু পাসোয়ান ও রিক্কি পাসোয়ান। পুলিশের গুলি লাগার ফলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অন্য এক ডাকাতের মৃত্যু হয়।
মামলার শুনানি চলে ৫ মাস ধরে। অবশেষে বুধবার সেই মামলায় ৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। আর বৃহস্পতিবার এই মামলায় দোষীদের সাজা ঘোষণা করেন রানাঘাট ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক। তাতে ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। এই মামলায় মোট ২০ জনের সাক্ষী গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের ভারতের দণ্ডবিধির ৩৯৫ এবং ১২০ বি ধারায় সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন বিচারক। এছাড়া অনাদায়ে এক মাস জেলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া একাধিক ধারায় সাজা দিয়েছেন বিচারক। এদিকে, এদিন সাজা ঘোষণা হওয়ার পরেও হাসিমুখে বাইরে বেরোতে দেখা যায় আসামি কুন্দনকে। সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করলে উত্তরে সে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে। তার কথায়, ‘আমি নির্দোষ।’ আদালতের রায়ের কপি পর চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।