ধূপগুড়ি মহকুমার দায়িত্ব নিলেন নতুন মহকুমাশাসক। আবির খেলে লাড্ডু বিতরণ করে উল্লাস মিছিলের মধ্য দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানালেন ধূপগুড়ি মহকুমা নাগরিক মঞ্চ। আজ, শনিবার ধূপগুড়ি ডাকবাংলো চত্বরে জড়ো হন ধূপগুড়ি মহকুমা নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা। তারপর ব্যান্ডপার্টি নিয়ে মহকুমা নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা আবির খেলে এবং পথচারীদের লাড্ডু বিতরণ করে ধূপগুড়ি বিডিও অফিস চত্বরে যায়। আজ সেখানে গিয়ে নতুন মহকুমাশাসককে বরণ করে নেন মহকুমা নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা। ২০২৩ সালে ধুপগুড়ির উপনির্বাচনের প্রচারে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িকে মহকুমা হিসেবে ঘোষণা করার প্রতিশ্রুতি দেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের ওই ঘোষণার জেরেই একুশের জেতা আসন উপনির্বাচনে খোয়াতে হয়েছিল বিজেপিকে।
এদিকে সেই হার মেনে নিতে পারেননি বিজেপি নেতারা। তাই নানা বিষোদগার করে থাকেন। রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি মতো ধূপগুড়িকে মহকুমা করতেই চ্যালেঞ্জ ছোড়েন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবারই এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন শুভেন্দু মেখলিগঞ্জে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘ক্ষমতা থাকলে একমাসের মধ্যে ধূপগুড়িতে মহকুমা প্রশাসন চালু করে দেখাক।’ কিন্তু একমাস সময় লাগল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শুক্রবার মহকুমার গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। নতুন মহকুমাশাসকের নাম ঘোষণা করা হয়। আর আজ, শনিবার ধূপগুড়ি বিডিও অফিসের অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দফতরের কার্যালয়ে এসে ধূপগুড়ি মহকুমার মহকুমাশাসকের দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন তমোজীৎ চক্রবর্তী।
অন্যদিকে এই ধূপগুড়ি একদা বামেদের শক্তঘাঁটি ছিল। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এই আসন থেকে জয়ী হয় বিজেপি প্রার্থী। আর সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনে বিজেপির জেতা আসন দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। যার নেপথ্যে অভিষেকের ওই ঘোষণা রয়েছে বলেই মনে করা হয়। এটাকেই শুক্রবার সরকারি সিলমোহর দিয়ে মহকুমার তকমা দিয়ে দেওয়া হয়। তখন শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ‘বিজেপির ধারাবাহিক আন্দোলনের ভয়েই ধুপগুড়িকে মহকুমা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।’ কিন্তু পাল্টা জবাব এত তাড়াতাড়ি আসবে তা কল্পনাও করতে পারেননি নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক।
আরও পড়ুন: প্রথমার্ধে উচ্চমাধ্যমিক, দ্বিতীয়ার্ধে একাদশের পরীক্ষা, সরকারি স্কুলগুলির নয়া ছক
এছাড়া সেই জবাব দেওয়া হল কাজের মধ্য দিয়ে। মুখের ভাষণে নয়। সুতরাং এই কাজের সরাসরি প্রভাব পড়বে লোকসভা নির্বাচনে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এদিন দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর ভীষণ খুশি নতুন মহকুমাশাসক। দায়িত্ব গ্রহণ করার পরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন নতুন মহকুমাশাসক তমোজীৎ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ধূপগুড়ি মহকুমার পথচলা শুরু হল। আমি ভীষণ খুশি জলপাইগুড়ি মহকুমা এবং ধূপগুড়ি মহকুমার জন্য কাজ করতে পারব বলে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী। সকলে সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন কিনা সেটা সর্বপ্রথম দেখতে চাই। প্রতিনিয়ত এখন থেকে ধূপগুড়িতে বসবো।’ নতুন মহকুমাশাসককে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ মিষ্টি মুখ করিয়ে সংবর্ধনা দেন।