পুজো মানেই মণ্ডপ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে মানুষের ভিড়। আর থিকথিক করা ভিড়ের সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতীরা অপকর্ম চালিয়ে থাকে। প্রতিবছরই পুজোয় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহর থেকে গ্রামে বেশি সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন থাকে। এমনকী পুলিশ আধিকারিকরাও রাস্তায় নেমে ডিউটি করে থাকেন। তবে তাঁদের সঙ্গে অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা থাকেন। আর এবার একেবারে নিরাপত্তা ছাড়াই রাস্তায় নামলেন জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার। একজন রিকশাতে চেপে নজরদারি খতিয়ে দেখলেন আর একজন বাইকে চেপে খতিয়ে দেখলেন পরিস্থিতি। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসক খুরশিদ আলি কাদরি এবং পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারকে পুজোতে এভাবেই দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেল।
আরও পড়ুন: তোমার ছুটি আমার নেই, পুজোর ডিউটিতে থাকা রাজ্য পুলিশের সঙ্গে একী করলেন যুবক! মন ভালো লাগবে আপনারও
অষ্টমীর সন্ধ্যায় নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে বাইকে করে বেরিয়ে পড়েন পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। তিনি শহরের বিভিন্ন মণ্ডপ ও এলাকায় নজরদারি চালানোর পাশাপাশি কর্তব্যরত পুলিশ এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। কোথাও নজরদারিতে খামতি রয়েছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখেন পুলিশ সুপার। তিনি জানান, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সমস্ত জায়গায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা ঠিক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা পুলিশের তরফ থেকে সমস্ত জায়গাতেই পুজোর সময় পরিদর্শন করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, মেদিনীপুরে ট্রাফিক ব্যবস্থাকে মসৃণ রাখার জন্য পুজোয় টোটো চালানো বন্ধ রাখা হয়েছে। পুলিশ সুপার জানান, মানুষ যাতে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন তার জন্য সব রকমের পদক্ষেপ করা হয়েছে। তিনি সাধারণ মানুষকে পুলিশের নির্দেশ মেনে চলার আবেদন জানিয়েছেন। একইসঙ্গে দুর্গা পুজোর শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন পুলিশ সুপার।
অন্যদিকে, এর পরের দিন নবমীর সন্ধ্যায় সরকারি গাড়ি এবং নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াই একেবারে রিকশায় চড়ে বিভিন্ন পুজো মণ্ডপ ঘুরে দেখেন জেলাশাসক। তাঁর সঙ্গে তাঁর পুত্র সন্তান ছিল। তিনি মণ্ডপ ঘুরে দেখার পাশাপাশি সাধারণ মানুষ এবং দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। উল্লেখ্য, রিকশায় চেপে জেলা শাসকের শহর পরিদর্শনে বেড়ানো এই প্রথম নয়। তিনি মাঝেমধ্যেই কখনও টোটো, কখনও রিকশাতে করে শহর পরিদর্শনে বের হন। তিনি জানান, ভিড়ের মধ্যে পুজো মণ্ডপগুলিতে মানুষের সমস্যা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের বক্তব্য, পুলিশ প্রশাসন যেভাবে তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে তার ফলে সবাই আনন্দ উপভোগ করতে পারবে। প্রশাসন এভাবে মাঠে নেমে কাজ করলে কারও কোনও সমস্যা হবে না।