হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল সন্দেশখালি যেতে পারবে দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফাইন্ডিং কমিটি। তা সত্ত্বেও কমিটির সদস্যদের সন্দেশখালি যেতে বাধা দিল পুলিশ। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে কমিটির সদস্যদের তীব্র বচসা বাঁধে। শেষ পর্যন্ত তাদের সন্দেশখালি যেতে দেয় পুলিশ। সেখানে গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাদের অভাব অভিযোগ শোনেন কমিটির সদস্যরা।
আরও পড়ুন: শাহজাহানকে ধরেছে পুলিশ, এবার ভবানী ভবনে ডাক পড়ল ইডি কর্তার
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা গ্রামের ২০ জন মহিলার সঙ্গে কথা বলেন। কীভাবে মহিলাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং কীভাবে তারা আতঙ্কে রয়েছেন সে বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য জানান ওই মহিলারা। সেক্ষেত্রে অধিকাংশ মহিলা ফ্যাট ফাইন্ডিং কমিটির সদস্যদের কাছে শিবু হাজরা নামে অভিযোগ করেছেন। এক মহিলা অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল নেতাকে বিনোদন যোগানোর জন্য রাতভর দলীয় কার্যালয়ে থাকতে হত। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির সদস্যদের বক্তব্য, এই মহিলার উপর যে অত্যাচার হয়েছে তা তার শরীরে আঘাত দেখলেই বোঝা যায়। তবে ভয়ে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পারেননি। উল্লেখ্য, ৬ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন পাটনা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি নরসিমা রেড্ডি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের যুগ্ম রেজিস্ট্রার রাজপাল সিং, ওপি ব্যাস, জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের কনসালট্যান্ট ভাবনা বাজাজ এবং প্রবীণ সাংবাদিক সঞ্জীব নায়ক। সদস্যরা এদিন সন্দেশখালির মাঝেরপাড়া, নতুনপাড়া ও নস্করপাড়ার রাসমন্দিরে যান।
প্রসঙ্গত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সন্দেশখালি যেতে চেয়েছিল ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির সদস্যরা। এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লির ওই কমিটির সদস্যরা সেখানে যেতে চেয়েছিল। ধামাখালি হয়ে সন্দেশখালির পাত্রপাড়া, মাঝেরপাড়া এবং নতুনপাড়ায় যাওয়ার কথা ছিল কমিটির সদস্যের। কিন্তু, পুলিশ তাদের পথ আটকায় বলে অভিযোগ। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বচসা বাঁধে। পুলিশের তরফে যুক্তি দেখানো হয় সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। তাই যেতে দেওয়া যাবে না। প্রায় ৫২ কিমি আগে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যদের আটকে দেয় পুলিশ। এর প্রতিবাদে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ করেন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা। এরপরই তাঁদের টেনেহিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলে পুলিশ। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকেও গ্রেফতার করে। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। তারপরেই কলকাতা হাইকোর্ট ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলকে সন্দেশখালির মাঝেরপাড়া, নতুনপাড়া ও নস্করপাড়ার রাসমন্দিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়। সেক্ষেত্রে থানায় মুচলেকা জমা দিয়ে যেতে হবে বলেই জানিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই মতো আজ রবিবার তারা সন্দেশখালি যান।