অবশেষে জামিনে মুক্ত করা হল বিজেপি–র ‘নবান্ন চলো’ অভিযানে হাওড়া ময়দান থেকে আগ্নেয়াস্ত্র–সহ ধৃত প্রাক্তন সেনা জওয়ান বলবিন্দর সিংকে। গত শুক্রবারই দিল্লি শিখ গুরুদোয়ারা ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি ও আকালি দলের মুখপাত্র মনজিন্দর সিং সিরসা টুইট করে জানান যে বলবিন্দর সিংকে নিঃশর্তে সসম্মানে মুক্ত করতে রাজি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ। ১১ দিনের পুলিশি হেফাজত শেষে সোমবার হাওড়া আদালতে তোলা হয় বলবিন্দর সিংকে। এদিন মুখ্য বিচারকের এজলাসে তাঁকে জামিনে মুক্ত করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, আড়াই হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁকে মুক্ত করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় আদালতের ভৎর্সনার মুখে পড়তে হয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশকে। কারণ, বলবিন্দর সিংয়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্রর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে আনে হাওড়া সিটি পুলিশ। যা বেআইনি এবং নিন্দনীয় দুটোই। একইসঙ্গে আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বলবিন্দর সিংয়ের বিরুদ্ধে যে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছিল তা ভিত্তিহীন। কারণ তাঁর আগ্নেয়াস্ত্রর যে লাইসেন্স রয়েছে তা প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট।
উল্লেখ্য, হাওড়া ময়দানে বিজেপি–র ‘নবান্ন চলো’ অভিযান চলাকালীন সেখানে থাকা বিজেপি–র যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য প্রিয়াংশু পান্ডের দেহরক্ষী বলবিন্দর সিংয়ের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেলে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধরপাকড়ের সময় তাঁর পাগড়ি খুলে যায়। সেই ঘটনার নিন্দায় সরব হয় সারা বিশ্বের শিখ সম্প্রদায়। দিল্লি থেকে রাজ্যে আসে দিল্লির এক শীর্ষ শিখ ধর্মীয় সংগঠন। তাঁরা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সুবিচারের আশায় সাক্ষাতও করেন। সম্প্রতি ছেলেকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আসেন বলবিন্দর সিংয়ের স্ত্রী করমজিৎ কউর। স্বামীর মুক্তির দাবিতে তিনিও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। বলবিন্দরকে ছাড়া না হলে ছেলেকে পাশে নিয়ে নবান্নের সামনে আমরণ অনশনে বসারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী।
এরই মধ্যে শুক্রবার রাতেই রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডিজি বীরেন্দ্র। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং বলবিন্দর সিংয়ের পরিবারকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, বেআইনি অস্ত্র সঙ্গে রাখা–সহ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খারজি করা হবে। এবং তাঁকে শীঘ্রই সসম্মানে মুক্তি দেওয়া হবে। এর পরই সোমবার জামিনে মুক্তি পেলেন বলবিন্দর।