গঙ্গাসাগরে কপিল মুনি আশ্রমকে কেন্দ্র করে সারা বছর ধরেই বহু সংখ্যক ভক্তের আনাগোনা লেগেই থাকে। তবে কপিল মুনি আশ্রমের কাছে সমুদ্রের পাড় ভাঙন একটি বড় সমস্যা। এই সমস্যার মোকাবিলায় অতীতে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছিল সরকার। তাতে কোনও কাজ হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত ভেঙেই চলেছে সমুদ্রের পাড়। সম্প্রতি এই সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জাপানি মডেলের পাইলট প্রজেক্ট হাতে নিয়েছিল সরকার। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। এই অবস্থায় কীভাবে কপিল মুনি আশ্রম সংলগ্ন সমুদ্রের পাড় ভাঙা রোধ করা যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে শুরু করেছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: সাগরের কপিলমুণির আশ্রম চত্বরে একবুক জল, নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাসিন্দারা
জানা গিয়েছে, মাত্র কয়েক মাস আগে গঙ্গাসাগরের কপিল মুনির মন্দির রক্ষা করার জন্য জাপানি মডেলে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয় করে পাইলট প্রোজেক্ট হাতে নিয়েছিল সরকার। এই প্রোজেক্টে টেট্রা ব্যাগে বালি ভরে পাইলেন দিয়ে রাখা হয়েছিল। এই সেচ দফতরের তরফে এই কাজ করা হয়েছিল। তারপরেই আধিকারিকরা ভেবেছিলেন কপিল মুনির মন্দিরের সামনে সমুদ্রের পাড় আর হয়তো ভাঙবে না। কারণ বড় বড় উন্নতমানের চটের ব্যাগের মধ্যে বালি ভরে সমুদ্রের ঢেউ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই পাইলট প্রজেক্ট সমস্তটাই সমুদ্র গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। এবার আবার কপিলমুনি মন্দির সংলগ্ন পাড় বা গঙ্গাসাগর রক্ষা করার জন্য নতুন করে পাইলট প্রজেক্ট হাতে নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়াররা। আজ শনিবার এই লক্ষ্যে সেচ দফতরের বিভিন্ন আধিকারিকরা সমুদ্রগর্ভের এলাকা ঘুরে দেখেন। এখন দেখার জাপানি মডেলের পর এই অন্য মডেল কাজ করে কিনা।
স্থানীয়দের দাবি, অতীতে ভাঙন বা ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে কপিল মুনির মন্দির অন্তত চারবার নষ্ট হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। নতুন করে তৈরি করতে হয়েছে মন্দির। এখনকার মন্দিরটি ১৯৭০ সালে তৈরি। জানা যাচ্ছে, ২০০০ সালে সমুদ্র থেকে প্রায় ৫-৬ কিমি দূরে ছিল এই মন্দির। আর এখন সমুদ্রের তীর ভাঙতে ভাঙতে একেবারে কাছে চলে এসেছে। ঘূর্ণিঝড় যশের পর অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। সমুদ্র সৈকতে বসানো বৈদ্যুতিক আলোর অনেকগুলি উঁচু পোস্ট জলের তলায় চলে গিয়েছে। কপিল মুনির মন্দিরের সামনে থাকা রাস্তাটি সমুদ্রের ধার ছুঁয়েছে। সেখানকার সৈকতের অবস্থা সবথেকে খারাপ।। বর্তমানে মন্দির থেকে মাত্র ৫০০ মিটার কাছে চলে এসেছে সমুদ্র। প্রতিদিনই ভাঙছে সাগরের পাড়। এই অবস্থায় ভাঙনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য বড় ধরনের কাজ করা জরুরি বলে মনে করছে প্রশাসন। না আগামী দিনে সমস্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।