মৎস্যজীবীদের ট্রলার, নৌকা, ভুটভুটির লাইসেন্স নবীকরণ হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। লাইসেন্স নবীকরণ না হওয়ায় হস্তান্তর বন্ধ রয়েছে। ফলে মৎস্যজীবীরা এখন বেজায় সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। এই সমস্যায় পড়ার কারণ কী? জানতে চান অনেক মৎস্যজীবীরা। এই প্রশ্নের উত্তর জানতে গেলে জানা যায়, ডায়মন্ডহারবারের–সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) পদে প্রায় চার মাস ধরে স্থায়ী কোনও অফিসার নেই। তার জেরেই সমস্যায় পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। আর তাই লাইসেন্স নবীকরণ ও হস্তান্তর বন্ধ রয়েছে।
এদিকে মৎস্যজীবীদের মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, লাইসেন্স নবীকরণ করতে হলে আগে ব্লক মৎস্য আধিকারিকের কাছে আবেদন জমা দিতে হবে। সেটা আসবে ডায়মন্ড হারবার এডিএফ মেরিনের কাছে। সেখান থেকে পৌঁছবে জেলা পরিষদে। আবার এডিএফ মেরিনের কাছে আবেদনপত্র এলে চূড়ান্ত হবে। আগে ডায়মন্ডহারবার–সহ মৎস্য অধিকর্তার অফিসে আবেদন করলেই তা চূড়ান্ত হয়ে যেত। তার জন্য একটা ছোট তদন্ত হতো। কিন্তু এখন স্থায়ী মৎস্য অধিকর্তা নেই। তার উপর মৌখিক নির্দেশ। যার কোন দাম নেই। তাই কি করবেন বুঝতে পারছেন না মৎস্যজীবীরা। এমন অবস্থায় কেমন করে ট্রলার, নৌকো, ভুটভুটি চালানোর লাইসেন্স নবীকরণ, মালিকানা হস্তান্তর, নতুন লাইসেন্স হবে সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানা উপকূল এলাকার মৎস্যজীবীরা।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কৃষ্ণনগর সভার জেরে উধাও বাস, চরম ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
অন্যদিকে প্রত্যেক বছর ৩১ মার্চের মধ্যে নৌকো, ভুটভুটি এবং ট্রলারের লাইসেন্স নবীকরণ করতে হতো। শেষ তিন বছরে নিয়ম বদলে হয়েছে, যে দিন নৌকো, ভুটভূটি এবং ট্রলারের লাইসেন্স নবীকরণ বা নতুন রেজিস্ট্রেশন করা হবে, সে দিন থেকে পরের বছর মেয়াদ ফুরোনোর আগে লাইসেন্স নবীকরণ করতে হবে। এই উপকূল এলাকায় প্রায় ১০,০৬২টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ট্রলার, ভুটভুটি আছে। মেয়াদ ফুরিয়েছে বহু জলযানের। এই বিষয়ে কাকদ্বীপের ট্রলার মালিক প্রসেনজিৎ দাস বলন, ‘আমার ট্রলারের মেয়াদ ফুরিয়েছে। লাইসেন্স নবীকরণ করার জন্য আবেদন জমা দিয়েছি। এখনও তা পাইনি। এই অবস্থায় সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে পুলিশ, কোস্টগার্ড ও বন দফতরের হাতে ধরা পড়লে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হচ্ছে।’
এছাড়া এই পরিস্থিতিতে পড়ে জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে মৎস্যজীবীদের। এখন তাঁরা কাজ করতে যেতেও পারছেন না। আবার ঝুঁকি নিয়ে ধরা পড়লে জরিমানাও দিতে হবে। ডায়মন্ডহারবারে–সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) পদে অস্থায়ী দায়িত্বে আছেন সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘আমি ডায়মন্ডহারবার ও আলিপুর দু’টির দায়িত্বে আছি। মৎস্যজীবীদের লাইসেন্স নবীকরণের বিষয়টি আমার ভাল জানা নেই। তাই সমস্যা হচ্ছে। স্থায়ী এডিএফ মেরিন শীঘ্রই যোগ দেবেন। তখন মৎস্যজীবীদের সমস্যা মিটে যাবে।’