কলকাতার দুর্গাপুজোর খ্যাতি রয়েছে গোটা বিশ্বে। প্রতিবছর জেলা থেকে তো বটেই বিদেশ এবং ভিন রাজ্য থেকে প্রচুর মানুষ কলকাতায় পুজো দেখতে আসেন। তবে এবার দুর্গাপুজোয় একেবারে উলটো ছবি দেখা গিয়েছিল। সে ক্ষেত্রে কল্যাণী লুমিনাস ক্লাবের পুজো ভিড় জমিয়েছিলেন কলকাতার মানুষ। ভিড়ের দিক দিয়ে এবার কল্যাণীর লুমিনাস ক্লাব কার্যত কলকাতার বড় বড় পুজোগুলিকে টেক্কা দিয়েছে। আগামীকাল কার্নিভাল হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কলকাতার বড় বড় ক্লাবগুলি এবারও কার্নিভালে অংশ নিচ্ছে। তাহলে কি লুমিনাস ক্লাবও কার্নিভালে অংশ নেবে? তাই নিয়ে শুরু হয়েছিল জোর চর্চা। তবে এবিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেল। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে , লুমিনাস ক্লাবের কার্নিভালে অংশ নেওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন: ১০০ দিনের বকেয়া টাকা আনুন! রাজভবনের পুরস্কার প্রত্যাখান কল্যাণী লুমিনাস ক্লাবের
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্নিভালে যে ১১ টি পুজো অংশ নিচ্ছে তাদের তালিকা ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেই তালিকায় কল্যাণীর লুমিনাস ক্লাবের নাম নেই। ক্লাবের কর্মকর্তারা অবশ্য কার্নিভালে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে , যে ফরমেটে আবেদন করতে হয় বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে ক্লাবের পক্ষ থেকে সেই আবেদন জমা পড়েনি। ফলে তাদের কার্নিভালের অংশগ্রহণ করার কোনও সম্ভাবনা নেই।
প্রসঙ্গত, লুমিনাস ক্লাবের পুজোর দেখতে নদিয়া জেলা কলকাতা তো বটেই অন্যান্য জেলা থেকেও প্রচুর দর্শনার্থী হয়েছে। চতুর্থী থেকেই লুমিনাস ক্লাবের মণ্ডপে জনসমুদ্র দেখা দেয়। ভিড় সামাল দিতে গিয়ে কার্যত হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশ প্রশাসনকে। শেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিয়ালদা–কল্যাণী সীমান্ত লাইনে কল্যাণী ঘোষপাড়া স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ানো বন্ধ করা হয়।তারপরেও ভিড় সামাল দেওয়া যায়নি। ক্লাবের কর্মকর্তাদের বক্তব্য, এবার পুজোয় প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের ভিড় হয়েছিল।
এ বছর ৩১ বছরে পা দিয়েছে লুমিনাস ক্লাবের পুজো। এই ক্লাবের পুজোর মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছিল চিনের বিলাসবহুল হোটেল গ্র্যান্ড লিসবোয়া’র আদলে। সে সঙ্গে ছিল আলোকসজ্জার কারুকার্য। লুমিনাস ক্লাবে প্রতিমা সাজানো হয়েছে ৫০ কিলো সোনার গয়না দিয়ে। বেঙ্গালুরুর একটি নামি সংস্থাকে লেজার শোয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে এই পুজোতে খরচ হয়েছে ৫৫ লক্ষ টাকা। নদিয়া জেলার সেরা সেরা পুজো নির্বাচিত হয়েছে কল্যাণী লুমিনাস ক্লাব। এছাড়াও রাজ্যপালের দুর্গারত্ন গোটা রাজ্য থেকে যে চারটি পুজো নির্বাচিত হয়েছে তার মধ্যে লুমিনাস ক্লাবের নাম ছিল। যদিও পুরস্কার গ্রহণ করেনি লুমিনাস ক্লাব।