মল্লারপুরে পুলিশি হেফাজতে নাবালকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ফের রাজ্য পুলিশ–প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। ৩০ অক্টোবর মল্লারপুর থানার লকআপে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় চুরির অভিযোগে ধৃত শুভ মেহেনা নামে ১৪ বছরের এক কিশোরের। সেই ঘটনায় আগেই বীরভূমের পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল আদালত। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হওয়ায় এবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজি–র কাছে রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট।
স্বাভাবিকভাবেই এ ঘটনায় রাজ্য পুলিশ–প্রশাসনের ওপর অস্বস্তি বাড়ল। আদালত ২৫ নভেম্বরের মধ্যে ওই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তা দেখার পরই পরবর্তী নির্দেশ দেবে আদালত।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর দেখে বা পড়ে কলকাতা হাইকোর্ট মল্লারপুরের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ করে। প্রথমে রিপোর্ট তলব করা হয়েছিল পুলিশ সুপারের। বৃহস্পতিবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত পুলিশ সুপারের রিপোর্টের ব্যাপারে আদলতকে অবগত করেন। এবং সেই রিপোর্টে একাধিক জায়গায় ধোঁয়াসা থাকায় কার্যত ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট।
বিচারপতি হরিষ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ এই রিপোর্টে একেবারেই সন্তুষ্ট নয়। ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কীভাবে মল্লারপুর থানার সিসিটিভি ফুটেজ উধাও হল? তাই নতুন রিপোর্টে রাজ্যের থানাগুলিতে কত সিসিটিভি রয়েছে এবং তা সেগুলি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা জানতে চাওয়া হয়েছে। কারণ, থানার মধ্যে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় সব থেকে বড় প্রমাণ সিসিটিভি ফুটেজ।
উল্লেখ্য, ২৯ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার একটি চুরির ঘটনায় শুভ মেহেনা নামে ওই কিশোরকে গ্রেফতার করে বীরভূমের মল্লারপুর থানার পুলিশ। নাবালক হওয়ায় তাঁকে লক আপে না রেখে থানায় বসিয়ে রাখা হয়। পুলিশের দাবি, রাতে শৌচাগারে যায় ওই কিশোর। দীর্ঘক্ষণ শৌচাগার থেকে না বেরনোয় সেখানে গিয়ে পুলিশকর্মীরা দেখেন আত্মঘাতী হয়েছে সে।
যদিও পুলিশের এই দাবি মানতে চায়নি বিজেপি। বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর অভিযোগ, ‘ওই কিশোরকে হেফাজতে পিটিয়ে খুন করেছে মল্লারপুর থানার পুলিশ।’ কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নাবালকের দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই বলে জানানো হয়েছে। তবে গলায় ফাঁসের দাগ মিলেছে। তা থেকে অনুমান আত্মহত্যা করে থাকতে পারে ওই কিশোর। যদিও এখনও সবটাই তদন্তসাপেক্ষ এবং আদালতের রায়ের ওপর নির্ভর করছে।