দিল্লির দাঙ্গা থেকে নজর ঘোরাতেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে প্রচারে মেতেছে কেন্দ্রে আসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। বুধবার এমনই অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন দক্ষিণ মালদার এক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দিল্লিতে কতজন মারা গিয়েছেন, তার সঠিক হিসেব কেউ জানেন না। আর মানুষ যাতে আসল করোনা (দিল্লির দাঙ্গা) ভুলে যায়, তাই ওরা টিভি-র সাহায্যে করোনাভাইরাস নিয়ে হুজুগ তৈরি করছে। শুধু করোনা করোনা করছে। যাতে মানুষ না প্রশ্ন করে দিল্লির হিংসায় কত জন মারা গিয়েছেন এবং কী ভাবে সেখানে সুবিচার পাওয়া যাবে।’
সভায় মমতা সাফ বলেন, ‘দিল্লিতে করোনায় কেউ আক্রান্ত হননি। অযথা করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না।’
এ দিনের সভায় মমতা বলেন, ‘বাংলায় কাউকে ইঁদুর কামড়ালেও ওরা সিবিআই তদন্ত চায়। আর দিল্লিতে এত জন খুন হওয়ার পরেও বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয় না। আমরা চাই, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে দিল্লির গণহত্যা নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হোক।
এ দিনই সকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের এক সভায় দিল্লির হিংসাত্মক ঘটনাপঞ্জিকে ‘গণহত্যা’ বলে চিহ্নিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, এখনও অন্তত ৭০০ মানুষ দিল্লিতে নিখোঁজ রয়েছেন।
চিন থেকে এবার ভারতেও থাবা বসিয়েছে করোনাভাইরাস। এখনও পর্যন্ত মোট ২৮ জন আক্রান্তকে চিহ্নিত করা গিয়েছে।
এ দিকে পুরসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে স্পষ্ট চাপে রয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিষয়টি নিয়ে তিনি যে বিরক্ত, তা উত্তরবঙ্গ সফরের মাঝে একাধিক বার জানিয়েছেন মমতা। এ দিন বিকেলে মালদার সুজাপুর মাঠের জনসভায় তৃণমূলের বুথভিত্তিক কর্মীসভায় ফের দলের নেতা-কর্মীদের এই বিষয়ে সচেতন করে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
মালদায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বার বার প্রকাশ্যে এসেছে। গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে বহু বার উদ্যোগ নিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু তা সত্ত্বেও জেলায় এই সমস্যা থেকে থেকেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সেই কারণেই মৌসম বেনজির নূরকে জেলায় দলের সভাপতি করা সত্ত্বেও মালদায় দলের সাংগঠনিক কাজে নিজে নজর রাখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তার উপরে, এর মধ্যেই মালদায় সংগঠন বেশ মজবুত করতে কোমর বেঁধে নেমেছে বিজেপি। বেশ কিছু এলাকায় তৃণমূল মডেল অনুসরণ করেই সক্রিয় হয়েছে বিজেপির সাংগঠনিক প্রচার। বিষয়টি নিয়ে পুর নির্বাচনের আগে তাই যথেষ্ট সতর্ক ঘাসফুল শিবির।