পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর বোর্ড গঠন সম্পন্ন হয়েছে। এখন তৃণমূলের জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যদের দিয়ে অঙ্গীকার পত্রে সাক্ষর করিয়ে নিচ্ছে তৃণমূল। কোনও সদস্য দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে যদি পদ চলে যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে কোনওভাবে অভিযোগ আদালতে জানাতে পারবেন না। এই মর্মে লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে অঙ্গীকার পত্র। আর এই নিয়ে দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে ধন্দ। সে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। আবার ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের সমস্ত সদস্যদেরই সাক্ষর করতে হবে না কি শুধু পঞ্চায়েতের সদস্যের এই অঙ্গীকার পত্রে সই করতে হবে তা নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাজ না করলে পদ যাবে! পঞ্চায়েতে জয়ীদের 'মুচলেখা' সই করাচ্ছে তৃণমূল
উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের একাধিক নেতা দাবি করেছেন শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়নি। স্থানীয় উদ্যোগে এই অঙ্গীকার পত্রে সই করানো হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন জানান, পঞ্চায়েত বোর্ডের সদস্য হওয়া মানেই পাঁচ বছরের জন্য জায়গা পাকা করা নয়। দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে সদস্য পদ বাতিল করা হতে পারে। সেই জন্য অঙ্গীকার পত্রে স্বাক্ষর করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় জেলায় নবজোয়ার কর্মসূচিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, পঞ্চায়েত ভোটে জয়ী সদস্যদের কাজ ৬ মাস অন্তর খতিয়ে দেখা হবে। সেক্ষেত্রে কেউ কাজ না করলে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ ভোটে জেতার পর পঞ্চায়েত সদস্য বা বোর্ড মেম্বার হওয়ার মানে পাঁচ বছরের সদস্যপদ পাকা করা নয়। আবার অঙ্গীকার পত্র নিয়ে অন্য কথা বলছেন রাজ্যের এক মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, অঙ্গীকার পত্রে সই করিয়ে নিতে হবে এমন কোনও নির্দেশিকা শীর্ষ নেতৃত্বের থেকে পাঠানো হয়নি। ওই মন্ত্রীর জেলাতে অঙ্গীকার পত্রে সই করানো হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেছেন। আবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় অঙ্গীকার পত্রের ফর্ম বিলি শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের আরও এক নেতা দাবি করেছেন ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে অঙ্গীকারপত্র সই করানোর কোনও নির্দেশ দলের তরফে আসেনি। আরও এক নেতার দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নব জোয়ার কর্মসূচির সময় জানিয়েছেন, সদস্যের সংক্রান্ত কাজ পর্যালোচনা করা হবে। সে ক্ষেত্রে আলাদা করে সই করানোর কোনও প্রয়োজন নেই। পূর্ব মেদিনীপুরের এক তৃণমূল নেতারও দাবি, দলের তরফে এই ধরনের কোনও নির্দেশ আসেনি।
যদিও তৃণমূলের এক সাংগঠনিক জেলা সভাপতির বক্তব্য, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড মেম্বারদের নির্বাচন করা হয়েছে সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে। তবে কয়েকটি জায়গায় অঙ্গীকার পত্রের ফর্ম বিলি করা হচ্ছে। তাহলে এখন প্রশ্ন, দলের তরফে যদি অঙ্গীকার পত্রের গর্মি বিলি করার নির্দেশ না আসে তাহলে কেন কয়েকটি জায়গায় এই ফর্ম বিলি হচ্ছে?