মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের অভাব–অভিযোগ জানতে খুলেছেন গ্রিভ্যান্স সেল। সেখানে জমা পড়া মানুষের অভাব–অভিযোগ খতিয়ে দেখে তার সমাধান করা হয়। এটা কতটা কার্যকরী সেটা বোঝা গেল রাজ্যে ঘটে যাওয়া একটি বড় ঘটনার সমাধানের মধ্যে দিয়ে। বাড়ির মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে জেনে হন্যে হয়ে খুঁজছেন মা–বাবা। কিন্তু ততক্ষণে নাবালিকাকে অপহরণ করে মালদার একটি বাড়িতে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। সেখান থেকেই মেয়েটির বাবার কাছে হোয়াটসঅ্যাপ কল আসে। আর মেয়েকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। দিশেহারা পরিবারটি তখন মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভ্যান্স সেলে অভিযোগ দায়ের করেন।
তারপর ঠিক কী হল? এই অভিযোগ জানিয়ে ওই পরিবার দুশ্চিন্তা করতে থাকে। তবে ততক্ষণে মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভ্যান্স সেল তৎপর হয়ে ওঠে। আর সঙ্গে সঙ্গে নবান্ন থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় মালদার পুলিশ সুপারকে। অবশেষে মেয়েটি উদ্ধার হয়। ঘাম দিয়ে যেন জ্বর ছাড়ে পরিবারের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মেয়েদের জন্য বেশি উদ্যোগী। তাই বাংলার মা–বোনেদের জন্য নানা সামাজিক প্রকল্প তিনি নিয়ে এসেছেন। প্রত্যেক থানা এলাকায় আলাদা করে মহিলা থানা করেছেন। সেখানে বাংলার মেয়েকে অপহরণ মেনে নেওয়া যায় না। তাই এই নাবালিকা উদ্ধারের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হল কতটা সক্রিয় মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভ্যান্স সেল।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছিল? বাংলার মেয়েদের অপহরণ আটকাতে তৎপর মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। তাই এই খবর পেয়ে অ্যাকশন নিতে বলা হয় মালদা জেলার পুলিশ সুপারকে। নবান্নের নির্দেশে ১৬ বছরের মেয়েটিকে অপহরণকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরায় পুলিশ। আর তখনই জানা যায়, বেঙ্গালুরুর এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় মেয়েটির। তারপর তাদের ঘনিষ্ঠতাও বাড়ে। এরপর মেয়েটির ঘনিষ্ঠতার ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে ওই যুবক। সুযোগ পেয়ে মেয়েটি ছবিগুলি যুবকটির মোবাইল থেকে ডিলিট করার চেষ্টা করে। কিন্তু ধরা পড়তেই চরম পরিস্থিতির সম্মুখীণ হতে হয়। নাবালিকা মেয়েটিকে অপহরণ করা হয়। তারপর মেয়েটির বাবাকে হুমকি ফোন করা হয়।
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই পরিস্থিতিতে ২৬ মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে যোগাযোগ করেন মেয়েটির বাবা। নবান্নের নির্দেশে মালদার পুলিশ সুপার বিশেষ দল গড়ে তুলে তদন্তে শুরু করে। মোবাইল ট্র্যাক করে মেয়েটির লোকেশন খুঁজে বের করে পুলিশ। তারপর বিশাল বাহিনী মেয়েটিকে উদ্ধার করে। আর অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তখন চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির তত্ত্বাবধানে মেয়েটিকে তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। আর ৫ জুন ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ জমা পড়ে নবান্নে। ১০ দিনের মধ্যে নাবালিকাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিল পুলিশ। মেয়েকে ফিরে পেয়ে তার বাবা বলেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।’