হাওড়ার ব্যাঁটরায় দুঃসাহসিক ডাকাতির কিনারা করে ফেলল গোয়েন্দারা। তদন্তে উঠে এসেছে, ডাকাতির এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাড়ির মালিকের প্যাথলজিকাল ল্যাবের সঙ্গে যুক্ত দু'জন কর্মী। একজনের নাম ধর্মেন্দ্র দাস। অন্যজন শুভজিৎ সামন্ত। দুজনকেই গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। তবে অপরাধীর কাছ অবধি গোয়েন্দাদের পৌঁছে দিতে সাহায্য করেছে বাড়ির পোষ্য কুকুর। ডাকাতির দিন বাড়ির কুকুরের ভূমিকাই তদন্তে কিনারা করতে সাহায্য করেছে গোয়েন্দাদের।
গত ২৫ জুন বিকেলে ব্যাঁটরায় হৃদয়কৃষ্ণ ব্যানার্জি লেনে গৌতম পালের বাড়িতে হানা দেয় এক দল দুষ্কৃতী। তখন তিনতলা বাড়িতে একাই ছিলেন গৌতমবাবু স্ত্রী সান্ত্বনা। পুলিশ জানতে পারে, সান্ত্বনা যখন দোতলার ঘরে টিভি দেখছিলেন, তখন তাঁকে প্রথমে দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়। তারপর তাঁর গলায় ভোজালি ঠেকিয়ে আলমারি থেকে লক্ষাধিক টাকার গয়না ও কয়েক হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। ডাকাতি যখন হয়েছিল, তখন গৌতম ও তাঁর ছেলে প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ছিলেন। তবে সান্ত্বনার সঙ্গে ছিল তাঁর পোষ্য কুকুর জিমি।
তদন্তে নেমে পুলিশের প্রথমে সন্দেহ হয়, বাড়িতে পোষা কুকুর রয়েছে। অথচ ডাকাতির সময়ে কুকুর কোনও চিৎকার করেনি? আশেপাশের বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, কোনও কুকুরের চিৎকারের আওয়াজ পাওয়া যায়নি। উল্টে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার দিন যাঁরা গৌতমের বাড়িতে এসেছিলেন, তাঁরা জিমিকে নাম ধরেও ডেকেছিল। তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে ছুটেও গিয়েছিল জিমি ও আদরও খেয়েছিল। এখানেই পুলিশ আরও সন্দেহ হয়, অচেনা অজানা কেউ নয়, গৌতমদের পরিচিত কেউই এই ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত। এরপর অবশ্য অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের বেশি সময় লাগেনি। পুলিশ ধৃতদের ধরে বেশ কিছু গয়না উদ্ধার করেছে। বাকি গয়না ও টাকা পয়সা উদ্ধারের জন্য পুলিশ বেশ কিছু জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, ধর্মেন্দ্র আরও ২ জন আত্মীয় এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের ধরতেও তৎপর হয়েছে পুলিশ। ধর্মেন্দ্রই বাকি দুষ্কৃতীদের গৌতমের বাড়িতে কোথায় কোন জিনিস আছে, তাঁর খোঁজখবর দেয়। পুরো পরিকল্পনামাফিক যে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত হয় পুলিশ।