বাসমতী চালের কদর রয়েছে সর্বত্র। সরু চালের ভাত কিংবা বিরিয়ানি, ফ্রায়েড রাইস সবার প্রিয়। শুধু তাই নয়, ওই চালের গন্ধ আলাদা পরিবেশ তৈরি করে দেয়। সুতরাং এই বাসমতী চালের সুনাম সর্বত্র আছে। তবে দাম বেশ বেশি। সাধারণ মানুষ পুজো–পার্বণে কিনে থাকেন। রোজকার খাবার হিসাবে ব্যবহার করা কঠিন। কারণ দাম নাগালের বাইরে। এই পরিস্থিতিতে বাসমতীর বাজারে থাবা বসাতে আসছে রাজ্যের নিজস্ব উদ্ভাবন ‘চুঁচুড়ামতী’।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? এই চাল এখন রাজ্য এবং জাতীয় স্তরের একাধিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এবার ‘স্টেট ভ্যারাইটি রিলিজ কমিটি’–তে যাওয়ার অপেক্ষা। চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রে এই নতুন ধান ফলানো হয়েছে। এই চালের সুগন্ধ বাসমতীর তুলনায় কিছুটা কম। তবেও স্বাদ প্রায় একইরকম। আর ফলন অনেক বেশি হয়। বাংলায় বাসমতী চালের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি ফলন হবে চুঁচুড়ামতী চালের। এমনকী দামও আসবে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে। এবার এটা বাজারে আসলে অনেকেই রোজ কিনে খেতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন নাম দেওয়া হয়েছে চুঁচুড়ামতী? চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রে এই নতুন ধান ফলানো হয়েছে বলেই চালের নাম দেওয়া হয়েছে চুঁচুড়ামতী। সুন্দর গন্ধের পাশাপাশি লম্বা ও সরু এই চাল। অন্যান্য রাজ্য তথা ভিন দেশেও বাসমতী চাল পাওয়া যায়। কিন্তু চুঁচুড়ামতী শুধু এই রাজ্যের। কলকাতায় ৯০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা কেজির বাসমতী চাল মেলে। এবার বাসমতীর মতো রাজ্যের নিজস্ব একটি জাত বা ধরন উদ্ভাবনের চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে করা হচ্ছিল। তাতে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। তার জেরে এবার এই চাল খেতে পারবেন বাংলার মানুষজন। সস্তায় মিলবে।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বর মাসে টানা তিনদিন ছুটি, নবান্নের ঘোষণায় খুশি সরকারি কর্মচারীরা
আর কী জানা যাচ্ছে? আর কিছু দিনের মধ্যে চুঁচুড়ামতী রাজ্যের ভ্যারাইটি রিলিজ কমিটির কাছে ছাড়পত্রের জন্য পাঠানো হবে। খরিফ ও বোরো মরশুমে এই ধান চাষ করা যাবে। চুঁচুড়ামতী খরিফ মরশুমে সাড়ে চার টন ও বোরো ৫.৮৯ টন করে ফলন দিচ্ছে। গবেষণা কেন্দ্রের যুগ্ম কৃষি অধিকর্তা (ধান্য উন্নয়ন) ইন্দ্রাণী দানা বলেন, ‘আমাদের গবেষকরা নতুন ধান চুঁচুড়ামতী–১ উদ্ভাবন করেছেন। যা বাসমতীর মতোই। আমরা ছাড়পত্রের জন্য দ্রুত পাঠাব।’ এখন দেখার চুঁচুড়ামতী কতটা বাজার ধরতে পারে।