হয়তো এই দিনটার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন সুতপা চৌধুরীর বাড়ির লোকজন। ২০২২ সালের ২রা মে বাড়ির একমাত্র মেয়েকে হারিয়েছিলেন। প্রকাশ্য রাস্তায় কুপিয়ে খুন করেছিল তারই প্রাক্তন প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরী। এরপর শুধুই ন্যায় বিচারের জন্য অপেক্ষা। অবশেষে এল সেই দিন। সুশান্ত চৌধুরীকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে আদালত। কিন্তু এই ফাঁসির সাজা শুনে ঠিক কী করলেন সুশান্ত চৌধুরী? কী বললেন আদলতে সাজাপ্রাপ্ত সুশান্ত?
সূত্রের খবর, একেবারে থমথমে মুখে বসেছিলেন সুশান্ত। কী হয় কী হয় এমন একটা ব্যাপার। এরপর বিচারপতি ফাঁসির সাজা শোনাতেই আদালত কক্ষেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সুশান্ত।
সুশান্তর পরিজনরাও আদালত কক্ষের বাইরে ছিলেন। আদালত কক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় তাদের দেখে ফুঁপিয়ে ওঠেন সুশান্ত। দ্রুত পুলিশ তাকে গাড়িতে তুলে ফেলে। কার্যত বিধ্বস্ত অবস্থা তার। গোলাপি রঙের জামা ঘামে ভিজে গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের বুুুম এগিয়ে দিয়েছিলেন সাংবাদিকরা। কিন্তু কোনও কথা বলেননি তিনি । একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তবে সংবাদমাধ্যমের সামনে এদিন সুশান্ত কিছু বলেননি। তবে এই কঠোরতম সাজা শুনে সুশান্ত আইনজীবীদের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠেন, সহানুভূতির খেলা হল। ন্যায় বিচার হল না। কার্যত স্বগতোক্তির মতো এই দুটি বাক্য বলেন তিনি। এরপর সোজা প্রিজন ভ্যানে।
সাজার কথা এসে পৌঁছয় সুতপাদের বাড়িতেও। মেয়ের কথা বার বার করে মনে পড়ছে। গোটা বাড়ি জুড়ে কেবল সুতপার স্মৃতি। বুকফাটা কান্নায় ভেঙে পড়েন সুতপার মা।
সুতপার পরিবারের লোকজন কী বললেন?
সুতপার মা বলেন, পুলিশ ভালো কাজ করেছে। আমরা ফাঁসি চেয়েছিলাম। আমার মতো পরিস্থিতি কারো যেন না হয়। কেউ তো আমার সন্তানকে ফেরাতে পারবে না। সবাই বলে সুতপার মা। খুব প্রাণবন্ত মেয়ে ছিল। সবাইকে মাতিয়ে রাখত। আমি কী হারিয়েছি সেটা আমিই বুঝতে পারছি। সব সময় বলত আমি চাকরি করব।
২০২২ সালের ২ মে। স্থান, বহরমপুরের গোরাবাজার এলাকার গার্লস হস্টেলের সামনের রাস্তা। সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল সেই ভয়াবহ দৃশ্য। সুশান্ত চৌধুরী নামে এক যুবক ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সুতপা চৌধুরী নামে এক কলেজ ছাত্রীর উপর। প্রেমে ধোঁকা খেয়েই তিনি খুন করেছিলেন ওই ছাত্রীকে। তদন্তে এমনটাও উঠে আসে। তবে সেই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছিল গোটা রাজ্য।