শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসে থাকাকালীন সম্মুখসমরে বুঝে নেওয়ার কথা বলতেন সৌমিত্র খাঁ। আর দলবদল করে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যেতেই নিজের জয়ের পিছনে শুভেন্দুর হাত রয়েছে বলে মন্তব্য করলেন সৌমিত্র খাঁ। এখন নিজের স্ত্রী'র প্রশংসা করলেন না। কারণ তিনি তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। তাই স্ত্রী সুজাতা নয়, ২০১৯ সালের ভোটে তাঁকে বিষ্ণুপুর থেকে জিততে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী বলে দাবি করলেন বিজেপি সাংসদ তথা বিজেপির যুব মোর্চা সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। কাঁথিতে শুভেন্দুর দলবদলের পর বড় জনসভায় এই কথাই বললেন তিনি। আর তাতেই সৌমিত্রর জয় নিয়ে উসকে উঠল বেশ কয়েকটি প্রশ্ন।
এক, তাহলে কি তিনি শুভেন্দুর কাছে জেতার জন্য সাহায্য চেয়েছিলেন? দুই, শুভেন্দু কি তলেতলে বিজেপি’র সঙ্গে তখন থেকেই যোগাযোগ রেখে চলেছেন? তিন, নির্বাচনে কি শুভেন্দু–সৌমিত্র বোঝাপড়া হয়েছিল? চার, নিজের সাংগঠনিক জোর বলে কি তাহলে সৌমিত্রের কিছুই নেই। পাঁচ, শুভেন্দু কি তাহলে দলে থেকেও বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন? উঠছে প্রশ্ন।
তখন ছিলেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা। কিন্তু সদ্য দলবদল করা অনুজ দলীয় কর্মীকেও তিনি সাহায্য করতে পিছপা হননি। অন্তত বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ’র বক্তব্যে তাই প্রমাণ গেল। কাঁথির জনসভায় বিষ্ণুপুরের সাংসদ বলেন, ‘সেদিন আমি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তৃণমূলের একজন নেতাকেই ফোন করেছিলাম—শুভেন্দুদা। বলেছিলাম, দাদা, আপনি বিষ্ণুপুরে প্রচার করতে আসবেন না। উনি আমার কথা শুনে আমার সংসদীয় এলাকায় প্রচার করতে আসেননি। তাই আমি জিততে পেরেছিলাম।’ সেদিনের অবদানের কথা জনসমক্ষে এনে শুভেন্দুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন সৌমিত্র।
আবার গত শনিবার মেদিনীপুর কলেজমাঠে দলবদলের মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন, ২০১৪ সাল থেকেই তিনি অমিত শাহের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। কেন রেখেছিলেন? তা অবশ্য তিনি খোলসা করে বলেননি।
উল্লেখ্য, আদালতের নির্দেশে বিষ্ণুপুরে সৌমিত্রর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাঁর প্রচারের গোটা দায়িত্ব একা কাঁধেই সামলেছিলেন স্ত্রী সুজাতা খাঁ। সৌমিত্রর সাংসদ হওয়ার পিছনে সুজাতারই হাত আছে এই ছবিই স্পষ্ট হয়েছিল। সুজাতা তৃণমূলে যোগদানের পর সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিবাহ-বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করলেও স্ত্রীর অবদানের কথা স্বীকার করেছিলেন সাংসদ নিজে। কিন্তু তারপরই তিনি জয়ের নেপথ্য নায়কের কৃতিত্ব দিলেন শুভেন্দু অধিকারীকে। নেপথ্যের ঘটনা কী? উঠছে প্রশ্ন।