একুশের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল জয়লাভ করার পর থেকে বিভিন্ন পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদে অনাস্থা আনতে শুরু করে। এবার এই কাজ করার আগে দলের আগাম অনুমতি নিতে হবে বলে নির্দেশ জারি করল জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকী বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর যেসব পঞ্চায়েতের প্রধান বা উপপ্রধানের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যেরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন সেগুলিও প্রত্যাহার করে নিতে হবে। সুতরাং কাঠখড় পুড়িয়ে দখল করা হলেও এখন একগাল মাছি তাঁদের মুখে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
এটি কোনও মৌখিক নির্দেশ নয়। স্বয়ং নদিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মহুয়া মৈত্রের স্বাক্ষরিত নির্দেশ এসে পৌঁছেছে। তাতে জানানো হয়েছে, দলের রাজ্য নেতৃত্ব এই নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অনেক নেতারাই মনে করছেন, পঞ্চায়েতে গৃহযুদ্ধ সামলাতেই এই ফরমান জারি করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কিছু প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট করানোর অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনের পরে সেই সব গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে শুরু করেন তৃণমূল কংগ্রেসেরই পঞ্চায়েত সদস্যরা। শুধু চাপড়াতেই পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জেলা সভানেত্রী নির্দেশ দেওয়ার পরও এই সব পঞ্চায়েতের দলীয় সদস্যেরা অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাহার করেননি। এই নিয়ে মন্তব্য করতে না চাইলেও রুকবানুর দাবি করেন, ‘আমি কিছু বলতে পারব না। আমায় জানিয়ে কেউ কিছু করেনি। তাছাড়া জেলা সভানেত্রী নিজে আমাকে এমন কোনও চিঠি পাঠাননি।’ নাকাশিপাড়া বিধানসভা এলাকায় একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, অনাস্থা প্রস্তাব আনতে গেলে দলের আগাম অনুমতি কার কাছ থেকে নিতে হবে? এটা কি নিচুতলার সংগঠনে কার্যত সভানেত্রীর একাধিপত্য কায়েম করা? এই সিদ্ধান্ত কেউ অগ্রাহ্য করলে কী হবে, তা অবশ্য স্পষ্ট হয়নি।