তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকেই উঠে আসছে। কোনও কোনও নেতা এই অভিযোগ তুলে দলের কাজে সক্রিয় ভূমিকা থেকে সরে এসেছেন। আবার দল ছেড়ে অন্য দলে নামও লিখিয়েছেন কেউ কেউ। কিন্তু দলের মন্ত্রীর সঙ্গে জেলা সভাপতির সরাসরি সংঘাত সম্ভবত এই প্রথম।
সম্প্রতি বর্ধমানে একটি অনুষ্ঠানে নাম না করে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে তাঁকে উন্নয়নের কাজ করতে না দেওয়া এবং দলের পুরনো কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী তথা মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। সেই অভিযোগকে আবার প্রকাশ্যেই কেতুগ্রামে ‘উনি যা বলেছেন, মিথ্যা ও বাজে কথা’ বলে পাল্টা দাবি করলেন অনুব্রত মণ্ডল। সুতরাং বিধানসভা নির্বাচনের আগে মন্ত্রী–জেলা সভাপতির সংঘাতে তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতির প্রাঙ্গন।
অনুব্রত মণ্ডলের মন্তব্য নিয়ে চর্চা এমন স্তরে পৌঁছয় যে, সিদ্দিকুল্লাও এদিন বলতে বাধ্য হন, ‘আমার কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। আমি সেই কথা মুখ্যমন্ত্রীকেও জানিয়েছি। এরপর কে, কী বলল তাতে কিছু আসে যায় না।’ ফলে এই জেলায় মন্ত্রী ও জেলা সভাপতির অনুগামীরা আড়াআড়িভাবে ভাগ হয়ে গেল। বিজেপি এই সুযোগ নিতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। কেতুগ্রাম ২ ব্লকের খারুলিয়া বিএড কলেজের মাঠে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে ছিলেন বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ, কেতুগ্রাম ১ ও ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তরুণ মুখ্যোপাধ্যায় ও বিকাশ মজুমদার। এঁরা উপস্থিত থাকলেও ছিলেন চুপ করে।
সীতাহাটি পঞ্চায়েতের ১৯টি, নিরোল ও কেতুগ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩টি করে বুথ কমিটিকে ডাকা হয় সেখানে। প্রতিটি বুথ থেকে ৪০ জন পুরুষ ও ২০ জন মহিলা কর্মী হাজির ছিলেন। আগামী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে মতামত জানতে চান অনুব্রত। কোথায় কত ভোটে দল পিছিয়ে আছে, তা মোকাবিলা করা হবে কিভাবে তা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে অনুব্রত বলেন, ‘আমি সবাইকে নিয়ে চলি বলে মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ও আউশগ্রামে সংগঠন মজবুত আছে। বিজেপি দাঁত ফোটাতে পারবে না।’