বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বিদ্রোহে ইতি টেনে তৃণমূলেই থেকে গিয়েছিলেন তিনি। পেয়েছিলেন দলের রাজ্য সহ-সভাপতির পদ। এবার বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকে দেখা গেল তাঁকে। প্রায় ৩ বছর পর। তবে কি শতাব্দী - অনুব্রত মন কষাকষি মিটেছে? অতটা সরলীকরণে নারাজ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
রবিবার দলের বীরভূম জেলা কার্যালয়ে শতাব্দী পৌঁছনোর কিছুক্ষণ পরেই পৌঁছন অনুব্রত। বৈঠকে লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রস্তুতি নিয়ে বিষদে আলোচনা হয়। বিধানসভা নির্বাচনে যে সব জায়গায় দল হেরেছে সেখানে হারের কারণ কী তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে খবর। তবে সব কিছুর ওপরে অনুব্রত ও শতাব্দীর একসঙ্গে বৈঠকে হাজিরা নিয়ে চর্চা।
গত লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের এমনই জেলা কমিটির এক বৈঠকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল শতাব্দী ও অনুব্রতকে। তার পর থেকে দুজনের সম্পর্কের শীতলতা বারবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
বিধানসভা নির্বাচনে নিজের ফ্যান পেজে এক পোস্ট করেন শতাব্দী। তার পরই শুরু হয় চরম শোরগোল। পোস্টে শতাব্দী লেখেন, কিছু মানুষ চায় না আমি কাজ করি। কাজ করতে চেয়েও পারছি না। মনোকষ্টে ভুগছি। এর পরই রাতারাতি বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন তিনি। জানান অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি যাচ্ছেন তিনি।
খবর পেয়ে তড়িঘড়ি শতাব্দীর বাড়িতে পৌঁছন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিনি। সেখানে বিষয়টি মিটমাট হয়। শতাব্দী জানান, তৃণমূল ছাড়ছেন না তিনি। দিন কয়েকের মধ্যে তাঁকে দলের রাজ্য সহ-সভাপতির পদ দেওয়া হয়।
এদিনের বৈঠকের পর শতাব্দী বলেছেন, ‘আমি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে নাম করে কিছু বলিনি। আমার বক্তব্য ছিল সিস্টেমের বিরুদ্ধে। তাতে দরকারি রদবদল হয়েছে। আজকের বৈঠকে যে সব এলাকায় দল পিছিয়ে সেখানে হারের কারণ খতিয়ে দেখা হয়েছে। পরে ব্লক সভাপতিদের সঙ্গেও বসবো। কোনও এলাকায় বারবার হারলে বদলে দেওয়া হবে নেতৃত্বকে।’
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, শতাব্দীর সঙ্গে অনুব্রতর মতানৈক্য মিটে গিয়েছে এমনটা ভাবা ভুল হবে। সামনে লোকসভা নির্বাচন। সাংসদ হিসাবে ফের জিতে আসতে গেলে এখন থেকেই ময়দানে নামতে হবে শতাব্দীকে। সেই কাজটাই শুরু করেছেন অভিনেত্রী - সাংসদ।