লোকাল ট্রেন হোক বা দূরপাল্লার ট্রেন—এখন সব ট্রেনের ক্ষেত্রেই খারাপ খবর মিলছে। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য থেকে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস থেকে শুরু করে সরাইঘাট এক্সপ্রেস সব ক্ষেত্রেই যাত্রীদের বিপাকে পড়ে নাকাল হতে হয়েছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় তো প্রাণ পর্যন্ত দিতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজ, শুক্রবার আবার ভাঙল ট্রেনের প্যান্ট্রোগ্রাফ। আর তার জেরে হাওড়া–ব্যান্ডেলের মাঝে ট্রেন চলাচল বেশ কিছুক্ষণের জন্য বিঘ্নিত হয়ে পড়ে। এই ঘটনায় আবার নতুন করে আতঙ্কের সৃষ্টি হল।
ঠিক কী জানা যাচ্ছে? স্থানীয় সূত্রে খবর, তখন ঘড়ির কাঁটা ঠিক দুপুর ২টো ২০ মিনিট। আর হাওড়া থেকে ছেড়ে বর্ধমান লোকাল দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। কিন্তু মানকুণ্ডু স্টেশন পেরিয়ে এগোতেই ঘটল বিপত্তি। কারণ তখন ওভারহেড তারের ভেঙে যাওয়া স্টপারে ধাক্কা খায় ওই লোকালের প্যান্ট্রোগ্রাফ। তাতে সেটি ভেঙে যায়। আর তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে বর্ধমান লোকাল। এই ট্রেনটি দাঁড়িয়ে পড়তেই পিছনে আর কয়েকটি ট্রেন এগোতে না পেরে দাঁড়িয়ে পড়ে। তখনই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রেলকর্মীরা। আর শুরু হয় মেরামতির কাজ। ৩.১০ মিনিট থেকে ৩.৫১ মিনিট পর্যন্ত দাঁড়িয়ে ছিল বর্ধমান লোকালটি। তারপর কোনওরকমে সামান্য মেরামতের জেরে ধীরগতিতে চলতে শুরু করে ট্রেনটি।
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই ঘটনার জেরে ট্রেনে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার জুড়ে দেন। কেউ কেউ লাফিয়ে নামার কথা ভাবতে শুরু করেন। তবে ধীরগতিতে ৪.২৪ মিনিটে ব্যান্ডেল স্টেশনে আসার পর ট্রেনটির প্যান্ট্রোগ্রাফ মেরামত করা শুরু হয়। তখন সেখানে নেমে ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। যাত্রীদের ক্ষোভে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় স্টেশনে। তারপর বর্ধমান লোকালটি বদল করে অন্য ট্রেনে রওনা দেন। বিকেল ৫টা নাগাদ যান্ত্রিক ত্রুটি সারিয়ে ট্রেনটি রওনা দেয় বর্ধমানের উদ্দেশে।
আর কী জানা যাচ্ছে? করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার স্মৃতি এখনও দগদগে হয়ে রয়েছে মানুষের মনে। তাই সামান্য কিছু ঘটলেই এখন মানুষ বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। কয়েকদিন আগে ভেঙে যায় সরাইঘাট এক্সপ্রেসের প্যান্ট্রোগ্রাফ। তা নিয়েও যথেষ্ট আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল। আবার মালদহ ইন্টারসিটির প্যান্ট্রোগ্রাফও ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু প্রায়ই প্যান্ট্রোগ্রাফ ভাঙা নিয়ে রেলের বিরুদ্ধে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। রেলের বেসরকারি নীতিকেই এসবের জন্য দায়ী করা হচ্ছে। তার সঙ্গে জুড়েছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। তাই বারবার প্যান্ট্রোগ্রাফ ভেঙে পড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে।