মনোরোগী সাজিয়ে এক প্রৌঢ়াকে তাঁর বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে সল্টলেকের আইএ ব্লকে। বৃহস্পতিবার প্রৌঢ়াকে তাঁর বাড়ির দোতলার ছাদ থেকে চ্যাংদোলা করে নামিয়ে আনা হয়। সাহায্যের জন্য চিৎকার চেঁচামেচি করেন ওই প্রৌঢ়া। তিনি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে কর্মীদের হাতে কামড়ও বসান। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। বাড়ি থেকে নিচে নামিয়ে এনে সোজা গাড়িতে তুলে ওই প্রৌঢ়াকে নিয়ে যাওয়া হয় রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে। যদিও পুলিশের তৎপরতায় রক্ষা পান ওই প্রৌঢ়া। ঘটনায় তিনি তাঁর স্বামী অরুণ মালাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ এই ঘটনায় অরুণ এবং তাঁর সহযোগী সম্রাট চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে।
আরও পড়ুন: সন্দেহজনক ৫ যুবককে আটক করে ডাকাতির সরঞ্জাম উদ্ধার
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রৌঢ়ার নাম রুনু মালাস। বৃহস্পতিবার তিনি নিজের বাড়ির দোতলার ছাদে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। তখনই রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারের কর্মীরা তাঁর বাড়িতে চলে আসেন। এরপর ছাদ থেকে জোর করে তাঁকে নিচে নামিয়ে আনেন। এমনকী মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রৌঢ়ার চিৎকার চেঁচামেচিতে এক প্রতিবেশী পুলিশকে ফোন করেন। ফোন পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এরপর প্রৌঢ়ার স্বামী এবং সম্রাটকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ রিহ্যাবের নাম জানতে পারে। পরে পুলিশ রিহ্যাবে ফোন করে প্রৌঢ়াকে ফিরিয়ে আনতে বলে। প্রৌঢ়ার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁর স্বামী এবং ওই ব্যক্তি ছাড়াও রিহ্যাব সেন্টারের কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে।
রুনুর অভিযোগ, দেড় দশকের বেশি সময় ধরে তিনি স্বামীর সঙ্গে আলাদা থাকছেন। তাঁর স্বামীর কথাতে রিহ্যাবিটেশন সেন্টারের কর্মীরা তাঁকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। প্রৌঢ়া বলেন, ‘ওরা আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। আমাকে ইনজেকশন দেওয়ার চেষ্টা করে। এমনকী আমাকে জোর করে মনরোগী বলে লিখিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করে। আমাকে জানায় আমার স্বামী নিয়ে যেতে বলেছিল।’
তাদের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। রিহ্যাবের তরফে সুমন পাল জানান, ‘মহিলার স্বামী ওদের খারাপ সম্পর্কের কথা গোপন করে আমাদের বিভ্রান্ত করেছে। কোনও রোগীকে আনতে গেলে একটু জোর করতে হয়। তবে ওকে মারধর করা হয়নি। আমরাও ওদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করব।’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রৌঢ়ার স্বামী একজন ওষুধ ব্যবসায়ী। স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যা ছিল। তাই বদলা নিতেই তিনি ওই রিহ্যাবে যোগাযোগ করেছিলেন। যদিও অভিযুক্তর আইনজীবী দাবি করেন, তাঁর মক্কেল নির্দোষ। তাঁর স্ত্রী তাঁকে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন।