এবারের বাদল অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব বিধায়ক–মন্ত্রীদের বেতন বাড়িয়ে দিয়েছেন। একধাক্কায় ৪০ হাজার টাকা বাড়িয়ে দিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। বিপাকে পড়ে বিজেপি নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এবার বর্ধিত বেতন দেওয়ার পাশাপাশি কড়াকড়ি শুরু করল রাজ্য সরকার। দলের কয়েকজন মন্ত্রী–বিধায়করা বিদানসভায় উপস্থিত থাকেন না বলে অভিযোগ। এমনকী তা নিয়ে একটি তালিকাও জমা পড়েছে। তাই এবার থেকে বিধানসভায় পৌঁছেই দিতে হবে ‘অ্যান্টডেন্স’। সই করতে হবে হাজিরা খাতায়। অনুপস্থিতি রুখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কড়া পদক্ষেপ করল তৃণমূল কংগ্রেস।
সম্প্রতি দেখা যায়, বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন অনেক বিধায়ক অনুপস্থিত। তাও আবার শাসকদলের। মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় উপস্থিত থাকলেও শাসকদলের মন্ত্রী–বিধায়কেরা নিয়মিত আসছেন না। এই নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ে রাজ্যের পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় কাজ। সূত্রের খবর, আজ বুধবার বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, এবার থেকে বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন শাসকদলের মন্ত্রী এবং বিধায়কদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। সুতরাং বর্ধিত বেতন যেমন মিলবে তেমন কাজও করতে হবে। কাজ না করে বেতন নিলে পরবর্তী ক্ষেত্রে অ্যাকশন নেওয়া হবে।
এদিকে নতুন নিয়ম চালু হতে চলেছে বিধানসভায়। আর সেটা হল— বিধানসভায় পৌঁছে মন্ত্রীদের সই করতে হবে পরিষদীয় মন্ত্রীর ঘরে। সেখানে থাকবে হাজিরা খাতা। বিধায়কদের সই করতে হবে নির্মল ঘোষের ঘরে। সেখানেও থাকবে হাজিরা খাতা। আর তাহলেই অনুপস্থিতি ঠেকানো সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকী কারা কারা অনুপস্থিত আছেন সেটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাহলে তাঁদের অনুপস্থিতির কারণ জানাতে হবে। যদি দেখা যায় সেটি যুক্তিগ্রাহ্য তাহলে ঠিক আছে। না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকী দু’কথা শুনিয়েও দেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘তোমায় নিয়ে ফুর্তি করব, কিন্তু বাচ্চাকে বাপের নাম দেব না’, সিপিএমকে তুলোধনা মদনের
আর কী জানা যাচ্ছে? বিধানসভার অধিবেশনে যেদিন পশ্চিমবঙ্গ দিবস এবং রাজ্য সঙ্গীত নিয়ে প্রস্তাব পাশ হয় সেদিন প্রায় ৪০ জনের বেশি বিধায়ক অনুপস্থিত ছিলেন। এই খবর পৌঁছে যায় মুখ্যমন্ত্রীর কানে। তিনি নির্দেশ দেন, এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হলেও কেন বিধানসভায় অনুপস্থিত থাকবেন? অনুপস্থিত বিধায়কদের তালিকা করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই আজ কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী সাতদিন অন্তর উপস্থিতির খাতা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠানো হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই তৈরি হয়েছিল বিধানসভার এই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।