নীল বাতি লাগানো গাড়ি, আই কার্ড, প্রতিপত্তি, দাপট, সব ঠিক পদস্থ আধিকারিকের মতো। সেই ভুয়ো আইএএসকে দেবাঞ্জন দেবকে জালে পুরেছিল পুলিশ।
অবশেষে জামিন পেলেন জাল কোভিড ভ্য়াকসিন কাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব। ২০২১ সালের ২৪ জুন কসবা থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছিল তাকে। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা করে ইডি। এদিকে তারপর থেকেই দেবাঞ্জনের নাম নিয়ে নানা চর্চা হতে থাকে। ওই ব্যক্তি নিজেকে আইএএস হিসাবে পরিচয় দিত। এমনকী পুরসভার কমিশনার হিসাবেও পরিচয় দিত নিজেকে। পাড়ার লোকজনের কাছেও সে এইভাবেই পরিচয় দিত। সেই দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন সাংসদ মিমি। এরপর পুলিশ নড়েচড়ে বসে।
আসলে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে ওই ব্যক্তি টিকাকরণের শিবির খুলত বলে খবর। তবে পুলিশ খবর পাওয়ার পরেই গ্রেফতার করে তাকে। পরে ইডি সেই মামলা হাতে নেয়। কলকাতা পুলিশের ১১টি থানায় দেবাঞ্জন ও তার খুড়তুতো ভাইয়ের কাঞ্চন সহ ৯জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তবে সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের ১১টি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট দেবাঞ্জনের জামিন মঞ্জুর করে। এবার ইডির মামলায় জামিন মেলায় জেল থেকে ছা়ড়া পাচ্ছেন দেবাঞ্জন।
তবে দেবাঞ্জনের ঘটনার তদন্তে নেমে কার্যত হতবাক হয়ে গিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। এমনকী নীল বাতি লাগানো গাড়ি চেপে ওই ব্যক্তি ঘুরতেন বলে অভিযোগ। তবে জামিন মিললেও একাধিক শর্ত আরোপ করা হয়েছে দেবাঞ্জনের উপর। দেবাঞ্জনের পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। দেবাঞ্জনকে তার ঠিকানা ও ফোন নম্বর তদন্তকারী আধিকারিকের কাছে জমা দিতে হবে। সেই সঙ্গেই কোর্টের অনুমতি ছাড়া তিনি কোনওভাবেই রাজ্যের বাইরে যেতে পারবেন না।
এদিকে তদন্তে নেমে জানা যায় তার চালচলন, নীলবাতি লাগানো গাড়ি, ঝা চকচকে অফিস সবই একেবারে সরকারি পদস্থ কর্তাদের মতোই ছিল। দেবাঞ্জন দেবকে গ্রেফতার করার পর একে একে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে ভয়াবহ সব চক্রান্তর কথা। কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডেও অভিযোগ ওঠে ওই ভুয়ো আইএএসের বিরুদ্ধে। ভুয়ো ভ্যাকসিন শিবির মামলায় দেবাঞ্জন দেব, ইন্দ্রজিৎ সাউ সহ ৯জনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিল পুলিশ।
শুধু ভুয়ো টিকাকরণ শিবিরই নয়, ভুয়ো টিকাকাণ্ডের পান্ডা দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক প্রতারণার অভিযোগও রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিজেকে IAS আধিকারিক ও পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পরিচয় দিয়ে সে নানা ধরনের প্রতারণা করত বলে অভিযোগ।