তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর যে আঘাত হয়েছে তার জন্য এবার নির্বাচন কমিশনকে তাক করলেন দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বাঁ–পায়ের গোড়ালিতে চিড় ধরেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এখন তিনি চিকিৎসাধীন। নন্দীগ্রামে বুধবার যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য এখন রাজ্য–রাজনীতি উত্তাল। এই পরিস্থিতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় আরও শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামের ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করল নির্বাচন কমিশন।
এই বিষয়টি নিয়ে পার্থবাবু ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, ‘ভীতু–কাপুরুষরা মমতাকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু কেউ তা পারবে না। প্রথমে রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)–কে সরিয়ে দেওয়া হল। তারপর রাজ্য পুলিশের ডিজি–কে সরিয়ে দেওয়া হল। তারপর এই ঘটনা! আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি, এতকিছুর পরিবর্তন করার পর এই ঘটনা নিয়ে নীরব নির্বাচন কমিশন। তাদেরকে অবশ্যই দায় নিতে হবে।’ উল্লেখ্য, নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, চক্রান্ত করে চার–পাঁচ জন তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এই ঘটনা রিপোর্ট তলব করল নির্বাচন কমিশন।
তৃণমূল সুপ্রিমো নিজেও একই অভিযোগ করেছিলেন নন্দীগ্রাম থেকে। তিনি এখন এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সংবাদসংস্থা এএনআই–কে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আজ তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা নির্বাচন কমিশনের দফতরে যাবেন। আর তাঁদের সামনে বিষয়টি তুলে ধরা হবে। নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে খামতি আছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। সংবাদসংস্থা পিটিআই–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ্যের বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বিরোধীরা তাঁদের রাস্তা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে দিতে চায়। তাই তাঁর উপর দুষ্কৃতীরা হামলা করেছে। মানুষ এই ঘটনার জবাব দেবে।’
সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব, বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে ও বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েকের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার ৫টার মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এদিন রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে ফোন করেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। ফোনে খোঁজখবর নেন তিনি। বিশেষত, ১৯৯১ সালে তাঁর উপর নির্মম ভাবে হামলা চালানো হয়। তবে এদিনের ঘটনায় সত্যিই কোনও ষড়যন্ত্রের যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে চায় নির্বাচন কমিশন। নিরাপত্তার এমন চক্রব্যূহ ভেদ করে ওই চার–পাঁচজন কি করে পৌঁছলেন তৃণমূল নেত্রীর কাছে? প্রশ্ন কমিশনের। জেলা পুলিশের কাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট ও পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য চাওয়া হয়েছে।