সব ঠিকই ছিল। কিন্তু কিছুই ঠিক হল না। লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে এমন অবস্থাই দেখে গেল নজরকাড়া কেন্দ্র বহরমপুরে। এই কেন্দ্রেই কংগ্রেসের প্রার্থী পাঁচবারের জয়ী সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী। যাঁর বিপরীতে তৃণমূল কংগ্রেস দাঁড় করিয়েছে হেভিওয়েট প্রার্থী বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে। আর তারপরই অধীর চৌধুরী বলতে শুরু করেছেন, তৃণমূলের কাছে নির্বাচনে হারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। রাস্তায় বাদাম বেচবো–সহ নানা কথা। এবার বহরমপুরকে ‘পাখির চোখ’ করে লড়াই করছে বিজেপি। তবে এখানে অধীরের হয়ে কোনও কংগ্রেসের বড় নেতা প্রচারে এলেন না। বরং সফর ঠিক করেও বাতিল করেছেন রাহুল গান্ধী বলে সূত্রের খবর।
এদিকে রাহুল গান্ধী বহরমপুর সফর বাতিল করার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বঙ্গ–কংগ্রেস নেতারা বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে। কারণ ইন্ডিয়া জোটে রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচনী একাধিক সভা–সমাবেশ থেকে মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি রাহুল গান্ধীর পক্ষে সওয়াল করেছেন। আর এখানের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর কড়া সমালোচনা করেছেন। অধীর বিজেপির দালাল হয়ে কাজ করছে বলে সোচ্চার হন মমতা–অভিষেক। তারপরই রাহুল গান্ধীর সফর বাতিল বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: খোদ গুজরাটে বুথ দখলের অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে, পুনর্নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন
অন্যদিকে বিজেপি বহরমপুরে চেয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসুক। কারণ এবার বিজেপি প্রার্থী করেছে নির্মল সাহাকে। তাই বহরমপুরে প্রচার আনতে চেয়েছিল নরেন্দ্র মোদীকে। কিন্তু একাধিকবার বাংলায় এলেও সময়ের অভাবে প্রধানমন্ত্রী সভা করতে আসছেন না বহরমপুরে। তিনিও সফর বাতিল করেছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে ঝাঁপিয়ে প্রচার করে গিয়েছেন। সেখানে অধীরকে কাঠগড়ায় তুলে দিয়েছেন তাঁরা। এমনকী অধীরকে বিজেপির ‘ডামি ক্যান্ডিডেট’ বলেও কটাক্ষ করেছেন অভিষেক।
এছাড়া এখানে কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরী তিন নম্বরে থাকবেন বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন এলেন না প্রধানমন্ত্রী? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই বিষয়ে বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশজুড়ে প্রচার করছেন। তাঁর পক্ষে একা সব কেন্দ্রে প্রচারে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে জেপি নড্ডা, যোগী আদিত্যনাথ বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রচার করে গিয়েছেন।’ আর কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা এলেন না? এই প্রশ্নের জবাবে অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘রাহুল গান্ধী আসতে চেয়েছিলেন ১১ তারিখে। আমরা জানালাম ১১ তারিখ শেষ প্রচারের দিন। আমরা ১০ তারিখে চেয়েছিলাম। কিন্তু ১০ তারিখের রাহুল গান্ধীর কেরলে কর্মসূচি আছে। তাই আসতে পারেননি।’