কোভিডের পরবর্তী সময়ে গত বছর থেকেই জোর কদমে শুরু হয়েছে বাংলার শিল্প ক্ষেত্রের মেগা ইভেন্ট বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলন। হাতে আর মাত্র চার মাস, তারপরেই রাজ্যে বসতে চলেছে বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনের আসর। কোনও বৃহৎ শিল্প নল্য, এবারের টার্গেট ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলির উন্নয়ন পরিকল্পনা। এই শিল্পগুলিকে সামনে রাখাই শিল্প সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে রাজ্য সরকার।
প্রশাসন সূত্রে খবর ২১ নভেম্বর উদ্বোধন হবে এবারের শিল্প সম্মেলনের। ওই দিনেই রাজ্যে আগত বিশিষ্ট অতিথিদের নিয়ে নৈশভোজ করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিগত বছরগুলিতে শিল্প সম্মেলন শুরুর আগের দিনই রাজ্যে আগত অতিথি, বিশিষ্ট শিল্পপতিদের নিয়ে নৈশভোজের আয়োজন করা হত। এবারে তা হবে সম্মেলন শুরুর দিন রাত্রিবেলা। গত সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের কর্তাদের সঙ্গে মুখ্যসচিব হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদী বৈঠক করে প্রাথমিক ভাবে শিল্প সম্মেলনের পরিকল্পনা ঠিক করেছেন বলেই সূত্রের খবর।
কেবলমাত্র বাংলার শিল্প সম্ভারের প্রদর্শনীই নয়, ভিন রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্যের প্রদর্শনীও করা হবে এবারের সম্মেলনে। কিছুটা চমকে দেওয়ার মত হলেও সত্যি কেবল বাংলা নয়, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, চণ্ডীগড়ে রাজ্যগুলির ‘রোড-শো’ হবে এবারের বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে। বিশেষ আমন্ত্রণ পাবে এই রাজ্যগুলির বণিক মহল। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা হবে ধনধান্য স্টেডিয়ামে। ধনধান্যের মূল অডিটোরিয়ামে ২০০০ আসন সংখ্যা রয়েছে। এছাড়ারও এর ভিতর আরও দুটি অডিটোরিয়াম রয়েছে। চলতি বছরের উদ্বোধন হয় এই তারকাখচিত অডিটরিয়ামের। প্রায় সাড়ে ৪৪০ কোটি টাকা ব্যায়ে রাজ্যের পূর্ত দফতর শঙ্খের আদলে এই অডিটোরিয়ামটি তৈরি করেছে। এই অডিটটোরিয়াম রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে হিডকো।
কিন্তু কারা আসতে চলেছেন এবারের শিল্প সম্মেলনে? সূত্রের খবর, সম্মেলনে কোন শিল্পপতি, সংস্থা আসবে, সোমবারের বৈঠকে তা নিয়ে কথা হয়নি। গতবারের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন গৌতম আদানি এবং তাঁর পুত্র করণ। পর্যায়ক্রমে এ রাজ্যে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা লগ্নির আশ্বাস দিয়েছিলেন তাঁরা। আদানি গোষ্ঠী ছাড়াও গতবারের বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনে হাজির ছিলেন উইপ্রো কর্ণধার আজিম প্রেমজি, ও জিন্দল গোষ্ঠীর আধিকারিকেরা। সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, হর্ষ নেওটিয়া, ঋষাদ প্রেমজি, নিরঞ্জন হিরা নান্দানি, সঞ্জীব মেহতার মতো শিল্পপতিরাও ছিলেন গতবারের সম্মেলনে। এবারে কোনও নতুন মুখ সংযোজিত হয় কিনা সেটাই দেখার। গতবার সম্মেলনের পরেই তাজপুরের গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের বরাত পায় আদানি গোষ্ঠী।
রাজ্য সরকারের সূত্রে জানা গিয়েছে, সিনেমা জগত নিয়ে পৃথক নীতি তৈরি করা হবে এবারের সম্মেলনের জন্য। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ নজর দিয়েছিলেন চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নতির জন্য। গতবারের বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে চলচ্চিত্র শিল্পের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্মেলনের প্রাক্কালে তাই তুঙ্গে শিল্প দপ্তরগুলির প্রস্তুতি।