বিজেপির অন্দরে বিদ্রোহের ঢেউ আছড়ে পড়ছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বঙ্গ–বিজেপির মুষল পর্ব কি শুরু হয়ে গেল? কারণ ঘরে–বাইরে পার্টির আদি নেতা থেকে জনপ্রতিনিধিদের একাংশের বিদ্রোহে দীর্ণ গেরুয়া শিবির। এই পরিস্থিতিতে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বার্তা, ‘মতের মিল না হলে সংগঠনের মধ্যে বলতে হয়। এটা অভ্যন্তরীণ সমস্যা। আমরা নিরাময় করে নিতে পারব’।
যখন ঘরে–বাইরে প্রবল অস্বস্তি তৈরি হয়েছে তখন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘বঙ্গ বিজেপি মৃত্যুপথযাত্রী।’ একইদিনে কেন্দ্রীয় জাহাজ রাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ এক ঝাঁক নেতা দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে সরব হলেন। নাম না করে দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর দ্রুত অপসারণ দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্বয়ং। আগেই দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন ৫ মতুয়া বিধায়ক। বাদ যাননি বনগাঁর সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরও।
কলকাতায় পোর্ট ট্রাস্টের গেস্ট হাউসে বৈঠক করার পর শান্তনু ঠাকুর বললেন, ‘উপরের নেতৃত্বকে ভুল বার্তা দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৯০ শতাংশকে বাদ রেখে কীভাবে কমিটি গঠন করা হল? আমরা এর বিরোধিতা করছি। একজন ব্যক্তি গোটা দলকে হাতে রাখতে চাইছেন। সংগঠনের একজন নেতা দলের পক্ষে ক্ষতিকর। অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সরিয়ে কমিটিগুলি হস্তগত করছেন।’
যদিও বিক্ষুব্ধদের এই বৈঠককে দলবিরোধী আখ্যা দিতে নারাজ রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। দল এই মতের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বলে মনে করি না। আমাদের রেজিমেন্টেড পার্টি। কিন্তু আপনি নিজের ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করতে পারবেন না, এমন দল নয়। উপযুক্ত জায়গা আছে, উপযুক্ত পরিসর আছে। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আছে। যাঁদের খুব সহজে পাওয়া যায়। সেখানে বললে সুরাহা আছে। পাবলিক বা মিডিয়াকে বললে, কয়েকদিন মিডিয়া মারফৎ ভেসে থাকা যায়, কিন্ত বিশেষ লাভ হয় বলে আমি মনে করি না। রাজ্যে বিজেপি খুব তাড়াতাড়ি বেড়েছে। এই বড় হওয়ার মুহূর্তে বিজেপির সঙ্গে প্রচুর মানুষ যুক্ত হয়েছেন। যাঁরা যুক্ত হয়েছেন, তাঁরা হয়তো বিজেপি নীতি আদর্শ জানেন না, জানতে পারেননি। সেজন্যই বিচ্যুতি।’
কিন্তু এই পরিস্থিতি সামাল দেবেন কিভাবে? উত্তরে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। কিছু সমস্যা খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হবে। আবার কিছু সমস্যা সমাধান হয় না, সেটাও মনে রাখতে হবে। নতুনরা এলে পুরনোদের জায়গায় ছেড়ে দিতে হয়। স্বাভাবিক কারণেই পুরনোদের দুঃখ হয়। সেই দুঃখ মেটানো যায় না।’