রাজ্যে সংশোধনাগারে মহিলা বন্দিদের সঙ্গে এখন ১৯৬ শিশু রয়েছে। জেলের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা কি হচ্ছেন মহিলারা? এই প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল মামলা। এবার সেই মামলারই প্রেক্ষিতে আজ, মঙ্গলবার শুনানিতে উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ শোনা গেল বিচারপতির কণ্ঠ থেকে। তবে বিস্ময় প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্ট। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট সব রাজ্যের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে। এবার রাজ্যের সংশোধনাগারের তথ্য চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। মহিলা বন্দিরা জেলে কেমন আছেন? তাঁদের কী পরিষেবা দেওয়া হয়? প্রশ্নের উত্তর রিপোর্ট আকারে তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে আজ এই মামলা ওঠে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে। বাংলার মহিলা সংশোধনাগারগুলি নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য পেশ করেছিলেন আইনজীবী তথা আদালত বান্ধব তাপস ভঞ্জ। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি জানান, সংশোধনাগারে থাকাকালীন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন একাধিক মহিলা বন্দি। আর এদিন বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘এমন অভিযোগের কী সামাজিক প্রভাব পড়তে পারে সেটা আমরা জানি। এটা মহিলা বন্দিদের কালিমালিপ্ত করার চরম পথ। তাঁরা অভিযুক্ত হয়ে জেলে। এই আবহে এমন একটা অভিযোগ যদি সামনে আসে সেক্ষেত্রে তা তাঁদের আরও বেশি কলঙ্কিত করতে পারে। একটা দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তিদের আরও বেশি করে এটা মাথায় রাখা জরুরি।’
অন্যদিকে সংশোধনাগারে মহিলা বন্দিরা গর্ভবতী হচ্ছে এটা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্ট। তারপরই এই রাজ্যে মহিলা বন্দিরা কেমন আছেন তা রাজ্যের কাছে জানতে চায় কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৮ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্যের আইনজীবীকে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর প্রত্যেকটি থানায় একজন করে সাইবার ক্রাইম বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পুলিশ কর্মী রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি নির্দেশ দেন, ‘এই মামলায় যুক্ত সমস্ত পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করবে রাজ্য। যার নির্যাস রিপোর্ট আকারে ৮ মার্চ পরবর্তী শুনানিতে আদালতে জমা দেবেন অ্যাডভোকেট জেনারেল।’
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর খাসতালুকে বিজেপির মহিলা সদস্যাকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস, অভিযোগ দলের নেতার বিরুদ্ধে
এছাড়া ইতিমধ্যেই দেশের সব রাজ্যের জেলের পরিস্থিতির রিপোর্ট তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জেলে মহিলা বন্দিরা কেমন করে অন্তঃসত্ত্বা হচ্ছেন, এখন তাঁরা কী অবস্থায় আছেন সেসব জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। তার মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে আদালত বান্ধব তাপস ভঞ্জ বলেন, ‘সমস্ত জেলে মহিলা বন্দিদের নিজেদের এনক্লোজারে যেতে হলে মূল গেট দিয়ে ঢুকে পুরুষ বন্দিদের সেলের সামনে দিয়ে অনেকটা রাস্তা যেতে হয়। রাতে আদালত থেকে নিয়ে যাওয়ার পর বন্দিরা ওখান দিয়ে যাওয়ার সময় পুরুষ বন্দিরা হায়নার মতো আচরণ করে।’ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, ‘কেউ স্বেচ্ছায় চাইলেন বা কোনও অভিযোগে কিছু পদক্ষেপ করতে হল সেটা আলাদা কথা। কিন্তু আদালত কোনওভাবে এমন কোনও পরীক্ষার অনুমতি দেবে না। কিছু সমস্যা আছে আমরা মানছি। কিন্তু সেটা নিয়ে আলোচনা করুন।’