এবার প্রবীণ নাগরিকদের জীবনে স্বস্তি ফেরাল কলকাতা হাইকোর্ট। ৬৫ বছরের বেশি বয়স হলে কোনও ব্যক্তির কাছে কোনও মামলার তথ্য জানতে এবং নথি দেখাতে তাঁকে স্থানীয় থানায় ডাকা যাবে না। স্থানীয় থানায় ডেকে এই কাজ করা যাবে না। তাতে একজন প্রবীণ নাগরিক শারীরিকভাবে সমস্যায় পড়তে পারেন। একটি মামলার শুনানিতে এমনই নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। থানায় ডেকে বসিয়ে রাখাটাও একপ্রকার হেনস্থা। শুধু তাই নয়, স্থানীয় থানায় যাওয়ার সময় পথ দুর্ঘটনার কবলেও পড়তে পারেন ওই নাগরিকরা।
ঠিক কী নির্দেশ বিচারপতির? এই বাস্তব পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবার নাগরিকদের যেমন সচেতন করলেন তেমনই স্থানীয় থানা ও তার পুলিশকে নয়া নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দিয়েছেন, ‘প্রয়োজন পড়লে মামলার তদন্তকারী অফিসার ওই ব্যক্তিকে আগে জানিয়ে তাঁর সময় মতো বাড়ি বা যেখানে তিনি কথা বলবেন, সেখানে গিয়ে দেখা করে বক্তব্য জোগাড় করবেন। আর তদন্তে সহযোগিতার নামে কাউকে থানায় ডেকে বসিয়ে রাখা যাবে না। এমনকী বিরক্ত করা যাবে না।’ সুতরাং প্রবীণ নাগরিকদের এখন মামলার বিষয়ে থানায় গিয়ে হত্যে দিয়ে বসে থাকতে হবে না। নিতে হবে না টেনশনও।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? রাজ্যে গরুপাচার মামলার তদন্ত চলছে। শেখ আসপায়ার আলি নামে এক বৃদ্ধকে গরু পাচার মামলায় ডেকে পাঠানো হয়। সিআইডি’র পক্ষ থেকে বারাসতের অফিসাররা তাঁকে তলব করেন। কারণ তাঁর নামে বসিরহাটে সীমান্তে গরু পাচারের অভিযোগে ২০১৭ সালে মামলা দায়ের হয়েছিল। ওই বৃদ্ধের পক্ষ থেকে আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি এবং জুঁই দত্ত চক্রবর্তী কলকাতা হাইকোর্টে জানান, এই মামলায় আগে পুলিশ বসিরহাটের মাটিয়া থানায় তাঁদের মক্কেলকে ডেকে পাঠায়। আর সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রেখে তাঁকে বিরক্ত করা হয়। প্রবীণ নাগরিকের সঙ্গে এমন কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে আদালতে।
আরও পড়ুন: কামারহাটি পুরসভার কাছে নথি তলব করল সিবিআই, ডাক ৩৪ জন কর্মীকেও
আর কী জানা যাচ্ছে? আর এমন অভিযোগ শুনে রেগে যান বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এখন এই ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। যা ভেঙে দিলেন বিচারপতি। প্রবীণ নাগরিকের কাছে পুলিশ যাবে। প্রবীণ নাগরিক থানায় যাবেন না। অভিযোগ, থানায় ডেকে জিজ্ঞসাবাদের কথা নথিবদ্ধ পর্যন্ত করা হয় না। আদালতে এমন কথাও ওঠে। সম্প্রতি সিআইডি সেই মামলা হাতে নিয়ে আবার প্রবীণ নাগরিককে তলব করেছে। আইনজীবীদের যুক্তি, ওই বৃদ্ধ এখন নানা অসুখে আক্রান্ত। তারপরও আবার তাঁকে সিআইডি বারাসতে তলব করেছে। বৃদ্ধের পক্ষের আইনজীবীদের কথা শুনে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত প্রবীণ নাগরিককে ডেকে পাঠানো নিয়ে পুলিশকে সতর্ক করে দিয়েছেন।