কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরেই গত সপ্তাহে মেধা তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তবে মেধা তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরেই অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন চাকরি প্রার্থীরা। সেই সংক্রান্ত মামলায় কমিশনের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল কলকাতা হাইকোর্ট। অভিযোগ, প্রথম মেধা তালিকায় যাদের নাম ছিল তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে সে বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। এই সমস্ত বিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন: আপার প্রাইমারির কোন স্কুলে চাকরির সুযোগ? চূড়ান্ত শূন্যপদের লিস্ট প্রকাশ কমিশনের
প্রার্থীদের অভিযোগ, মেধাতালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার পাশাপাশি অনেক প্রার্থীর নাম বিকৃত করা হয়েছে। তাছাড়া, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ জানিয়ে তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরে বেশ কয়েকজন প্রার্থী আদালতের দ্বারস্থ হন। উল্লেখ্য, গত ১৬ অগস্ট উচ্চ প্রাথমিকে তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। সেইসঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ ছাড়া নিয়োগ করা যাবে না বলেও কমিশনকে জানিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ মেনেই গত ২৩ অগস্ট মেধা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
প্রসঙ্গত, উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। এরপর ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর প্রথম তালিকা প্রকাশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। কিন্তু, তাতে অসঙ্গতি মেলায় সে মেলে তালিকাকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন একাধিক প্রার্থী। ২০২০ সালে ১১ ডিসেম্বর পুরো মেধা তালিকা বাতিল করে দিয়েছিলেন বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য। সেইসঙ্গে কমিশনকে তিনি ইন্টারভিউয়ের সঙ্গে মেধা তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২০২১ সালের জুন মাসে সেইমতো মেধা তালিকা প্রকাশ করে কমিশন। কিন্তু, তাতেও অসঙ্গতি ধরা পড়ে। সেই তালিকাকে চ্যালেঞ্জ করে ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন প্রার্থিতা।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সেই মামলায় নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রার্থীরা ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের অভিযোগ কমিশনের কাছে জানাতে পারবেন। তবে সেই নির্দেশকে প্রার্থীর চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। ডিভিশন বেঞ্চে সেই নির্দেশ বহাল থাকে। সেইমতো প্রার্থীরা অভিযোগ জানালেও কমিশন সেই অভিযোগ ঠিকমতো খতিয়ে দেখেনি বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর মামলা ওঠে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানে তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেন। কিন্তু তালিকা প্রকাশ হতেই অসঙ্গতি মিলেছে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মামলাকারীদের লিখিত বক্তব্য আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্কুল সার্ভিস কমিশনকে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর মধ্যে তার উত্তর দিতে বলা হয়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।