‌এবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী, রাজ্যকে কড়া প্রশ্ন

এই চিঠির পরই সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য–কেন্দ্র সংঘাত।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (ছবি সৌজন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়)

বিদ্যুৎ আইন সংশোধনী বিলে আগেই আপত্তি জানিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিল আইনে পরিণত করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে বেসরকারিকরণ করে মুনাফা করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার বলেই তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ। আর তা থেকেই আপত্তি। আর এই ইস্যুতে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া চিঠি দিয়েছেন মোদী মন্ত্রিসভার বিদ্যুৎমন্ত্রী রাজকুমার সিং। চিঠিতে তিনি সরাসরি উল্লেখ করেছেন, একটি বেসরকারি সংস্থার একচেটিয়া ব্যবসাকে তিনি কেন বাঁচাতে চাইছেন?‌ এই চিঠির পরই সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য–কেন্দ্র সংঘাত।

নবান্ন সূত্রে খবর, কেন্দ্রের তোলা এই অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা। কারণ এখানে একটি বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা আছে ঠিকই। কিন্তু তারা বিদ্যুৎ সরবরাহ করে মাত্র ৪০ লক্ষ মানুষজনকে। আর সরকার নিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎ সংস্থা প্রায় দু’কোটির বেশি গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। সুতরাং কারও একচেটিয়া ব্যবসা বাঁচানোর প্রশ্নই নেই।

কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠিতে রাজকুমার উল্লেখ করেছেন, কলকাতায় এক বেসরকারি সংস্থা বিদ্যুৎ বণ্টন করে। এমনকী তারা গোটা দেশে চড়া হারে মাসুল আদায়কারী সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম। এখানে তাদের একচেটিয়া কারবার। তাই বিদ্যুৎ আইন সংশোধন করে কেন্দ্রীয় সরকার বিদ্যুৎ বণ্টনে প্রতিযোগিতা নিয়ে আসতে চাইছে।

এইসব কথা জানানোর পাশাপাশি চিঠিতে রাজকুমার লিখেছেন, ‘আপনি কেন একটি বেসরকারি সংস্থাকে প্রতিযোগিতা থেকে বাঁচাতে চাইছেন সেটা স্পষ্ট নয়। দেখা যাচ্ছে, আপনার অফিসাররা আপনাকে ঠিকমতো ব্যাখ্যা করেননি।’ এই চিঠির পর থেকেই রাজ্য–কেন্দ্র সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এখন মুখ্যমন্ত্রী উপনির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। সেখানে হঠাৎ এই চিঠি পাঠিয়ে বিব্রত করতে চাইছে কেন্দ্র বলে মনে করা হচ্ছে।

এই নয়া বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল নিয়ে এসেছে কেন্দ্র। অগস্ট মাসে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি বিরোধিতা করে নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন। এবার পাল্টা চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী জানিয়েছেন, নয়া যে সংশোধনী বিল নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে তা আগের বিলের থেকে আলাদা। মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা না করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরুদ্ধে। আর বিদ্যুৎমন্ত্রীর যুক্তি, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা হয়নি এটা বলা ভুল। রাজ্যের মতামত জানতেই বিল পাঠানো হয়েছে। এখন দেখার এই চিঠির প্রতিক্রিয়া কি দেন মুখ্যমন্ত্রী।