সামনে লোকসভা নির্বাচন। রাজ্য–রাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতি তেতে উঠেছে। বাংলা থেকে গুজরাট—সর্বত্রই হাওয়া গরম। কিন্তু এই আবহে মানুষের সমস্যা আরও বেড়ে গেল। তাঁরা রাজনৈতিক ব্যক্তি নন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। কিন্তু পকেটে টান পড়তে চলেছে আমজনতার। কারণ শহর কলকাতায় আরও একবার দাম বেড়ে গিয়েছে মুরগির মাংসের। যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে দিয়ে এখন সর্বকালীন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চিকেন। এখন কলকাতা–সহ আশেপাশের জেলায় চিকেনের প্রতি কেজির দাম ২৭০–২৮০ টাকা। যার ছ্যাঁকায় হাত পুড়েছে মধ্যবিত্তের। আবার মাটনের চড়া দামের জেরে চাপে রয়েছে আমজনতা। তার মধ্যে আবার চিকেনের দাম বেড়ে যাওয়ায় পকেটে চাপ পড়েছে।
এদিকে কয়েকদিনের মধ্যে যেভাবে মুরগির মাংসের দাম বেড়ে গেল তাতে কপালে ভাঁজ পড়েছে গৃহস্থদের। বাজারের ব্যাগ নিয়ে গিয়ে দাম শুনে অনেকেই স্থান ত্যাগ করেছেন। শহর কলকাতা থেকে শুরু করে পার্শ্ববর্তী জেলায় কবে ২৮০ টাকা কেজিতে মুরগির মাংস বিক্রি হয়েছে সেটা অনেকেই মনে করতে পারছেন না। গত রবিবার দিনই চিকেনের প্রতি কেজিতে দাম ছিল ২৭০ টাকা। যা এই সপ্তাহে আরও বেড়েছে। তার প্রভাব পড়েছে মধ্যবিত্তের হেঁশেল থেকে শুরু করে হেটেল, রেস্তোরাঁতেও। তাই দাম বেড়ে গিয়েছে মাংসের থালির।
আরও পড়ুন: ‘আজ ব্যারাকপুর চায় একজন ভদ্রলোককে’, দলকে ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন দীনেশ
অন্যদিকে মুরগির মাংসের দাম যে লাগামছাড়া হয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মদন মাইতি। তিনি জানান, পোলট্রি খাবারের দাম বৃদ্ধির জেরেই বাংলায় মুরগির মাংসের দাম বৃদ্ধি হয়েছে। মুরগির খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয় ভুট্টার দানা। যা এখন ইথানল শিল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে। সুতরাং মুরগির খাবারে কিছুটা ঘাটতি পড়ছে ভুট্টা দানার। ফলে বাজারে চড়ছে ভুট্টা দানার দাম। সেটা কিনতে বাড়তি কড়ি খরচ করতে হচ্ছে। কয়েক মাস আগেও যে ভুট্টা দানার দাম ছিল ২০ টাকা সেটা বেড়ে হয়েছে ২৬ টাকা। তাই মুরগি প্রতিপালনের খরচ বাড়ছে। চিকেনের দামও আগুন হচ্ছে।
এখনও সেভাবে গরম পড়েনি। তাই চিকেন পাতে উঠে আসুক ছুটির দিনে চাইছে অনেকেই। কিন্তু চাইলেই পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ এই দামে চিকেন বা মুরগির মাংস কিনতে গেলে বাজেট বেড়ে যাচ্ছে। তাই ইচ্ছে থাকলেও উপায় থাকছে না। এই বিষয়ে মদন মাইতি বলেছেন, ‘রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ভু্ট্টা চাষ আগের থেকে অনেক বেড়েছে। কিন্তু তাও আমদানির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এই আবহে ইথানলের জন্য ভুট্টার ব্যবহার হওয়ায় চাহিদা ব্যাপক বাড়ছে। সব রাজ্যগুলি যদি একসঙ্গে ভুট্টা উৎপাদন বৃদ্ধি করে তাহলে সংকট মিটতে পারে। অন্যথায় নির্ভর করতে হবে আমদানির উপরে।’