মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করা গ্রিভ্যান্স সেলে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। এবার সেই সব অভিযোগের সমাধান করতে সময়সীমা বেঁধে দিলেন মুখ্যসচিব। আর তার জন্য সাতদিন বরাদ্দ করা হয়েছে। এই সময়সীমার মধ্যেই সঠিকভাবে সমস্ত অভিযোগের নিষ্পত্তি করে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ, শুক্রবার চিঠি দিয়ে সমস্ত দফতরকে সে কথা জানিয়ে দিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এই নিয়ে এখন নবান্নের অন্দরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? নবান্নে জমা পড়েছে একাধিক অভিযোগ। তিনভাবে এই অভিযোগ এসেছে নবান্নে। এক, দুয়ারে সরকার শিবির থেকে। দুই, দিদির দূতদের কাছে। তিন, নবান্নের গ্রিভ্যান্স সেলে এসে পড়েছে অভিযোগ। এবার অভিযোগকারীর সমস্যা সমাধান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই যদি সংশ্লিষ্ট অভিযোগকারীকে মোবাইল নম্বরে না পেলে তাঁর ঠিকানায় অফিসার পাঠিয়ে খোঁজ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাতেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকারের সব দফতর। কারণ এবার কাজের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আর তার মধ্যেই কাজ শেষ করতে হবে। তারপর সেই রিপোর্ট পৌঁছে দেওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সুতরাং কোনও ঢিলেঢালা দেওয়া যাবে না বলে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
ঠিক কী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে? সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধান করতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যসচিব তাঁর নির্দেশে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, অবিলম্বে অভিযোগকারীর সঙ্গে কথা বলে, সেখানে পরিদর্শন করে রিপোর্ট পাঠাতে হবে। কোনও আবেদন খারিজ করার যথেষ্ট কারণ না থাকলে যেন পরিষেবা প্রদান করা হয়। যদি কারও কোনও প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্যতা থাকে, আর তিনি আবেদন না করে থাকেন তাহলে তাঁর আবেদনপত্র জমার ব্যবস্থা করতে হবে। আর জমা পড়া অভিযোগ যেন দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ঠিক কী? সমস্ত দফতরের মন্ত্রী ও অফিসারদের নিয়ে নবান্নে দু’দিন আগে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী উদাহরণ তুলে বলেন, ‘একটা পাঁচ বছরের মেয়ের নামে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আবেদন এসেছিল। কিন্তু সেটা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আমি বললাম, ওকে ডেকে বলো, তুমি এটা পাওয়ার যোগ্য নও। তবে তুমি কন্যাশ্রী পাবে। তোমাকে কন্যাশ্রী করে দিচ্ছি। মানুষকে মানবিক দিক থেকে বুঝিয়ে বলতে হবে। মানবিকভাবে কাজটা করতে হবে।’ তাই মুখ্যসচিব এবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমস্যার সমাধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে সাতদিনের মধ্যে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব।