সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহানকে আগেই গ্রেফতার করেছে ইডি। এবার তাকে ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। আজ শেখ শাহজাহানকে ইডির বিশেষ আদালতে তোলা হয়। সেখানে তার বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে নিজেদের হেফাজতে পাওয়ার জন্য আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। কীভাবে জোর করে জমি নিয়ে টাকা আয় করতেন এবং কালো টাকা কীভাবে সাদা করতেন শাহজাহান? সেই তথ্য আদালতে পেশ করে ইডি।
আরও পড়ুন: সন্দেশখালি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বিরাট ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার, খারিজ হল আবেদন
ইডির পক্ষ থেকে আদালতে দাবি করা হয়, শেখ শাহজাহান আদিবাসীদের কাছ থেকে জোর করে জমি নিতেন। আর সেই জমি অন্য কাউকে টাকার বিনিময়ে ব্যবহার করতে দিতেন। এভাবেই ওই সমস্ত জমি থেকে প্রচুর টাকা আয় করতেন শাহজাহান, যা সবই ছিল কালো টাকা।
শুধু তাই নয় সন্দেশখালিতে যে সিন্ডিকেট চলত, তার মূল পান্ডা ছিলেন এই শাহজাহান। ইডি দাবি করেছে, ভেড়ির আড়ালে ওই কালো টাকা সাদা করা হত। ওই কালো টাকা যে আসলে সঠিকভাবে আয় করা হয়েছে, তা বোঝানোর জন্য বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠকে ভেড়ির মালিক হিসেবে দেখানো হত। সেই ভেড়িতে চলত চিংড়ির ব্যবসা। আর সেই ব্যবসার মাধ্যমেই কালো টাকা সাদা করতেন শাহজাহান। চিংড়ির যে ব্যবসা রয়েছে, সেটি শাহজাহানের মেয়ে শেখ সাবিনার নামে রয়েছে।
ইডি দাবি করছে, চিংড়ি কেনাবেচার ক্ষেত্রে নগদ টাকাতেই লেনদেন হত। আর সেই টাকা একটি সংস্থার মাধ্যমে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যেত। যে সংস্থার মাধ্যমে টাকা লেনদেন হত, সেই সংস্থার নামও আদালতে এদিন পেশ করে ইডি।
যদিও এদিন আদালতে শাহজাহানকে গ্রেফতারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁর আইনজীবী। তিনি দাবি করেছেন, নিয়ম অনুযায়ী গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের হাজির করানো উচিত। কিন্তু শাহজাহানের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি।
অন্যদিকে, সোমবার শাহজাহানকে আদালতে পেশ করা হলে তার ফাঁসির দাবি তোলেন আইনজীবীদের একাংশ। আদালতের গেটের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে শাহজাহানের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন আইনজীবীরা।
তবে আদালতে ইডি দাবি করেছে, শাহজাহান তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। তাছাড়া, শাহজাহান একাধিক প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছেন। তিনি তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। আরও অনেকের নাম জানা গিয়েছে। তারা পালিয়ে যেতে পারেন। ইডির তরফে দাবি করা হয় যে শুধু সন্দেশখালির স্বার্থে নয় গোটা ভারতের স্বার্থে শাহজাহানকে ইডি হেফাজতে পাঠানো হোক। এর পরে তাকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ইডি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।