হাতে বেশি সময় নেই। আর আটদিনের মাথায় সাধারণতন্ত্র দিবস। তার মধ্যেই অব্যাহত রয়েছে ট্যাবলো বিতর্ক। নয়াদিল্লির রাজপথের প্যারেড থেকে বাংলা এবং তামিলনাড়ুর ট্যাবলো বাদ পড়েছে। এই নিয়ে জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অবশেষে মাঠে নামলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বাংলা এবং তামিলনাড়ুর ট্যাবলো বাদ পড়া নিয়ে চিঠি লিখে জবাব দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
আজ, মঙ্গলবার হিন্দি এবং ইংরেজিতে চিঠি লিখেছেন রাজনাথ সিং। তাতে বিতর্ক আরও বেড়েছে। ঠিক কী লিখেছেন তিনি? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমাদের সরকার ১৯৪৩ সালে নেতাজির নেতৃত্বে গঠিত সরকারের উদযাপন করেছিল। গণতন্ত্র দিবসে আজাদ হিন্দ ফৌজের জীবিত সেনাদেরকে সামিল করে সম্মানিতও করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে সেই ভাবনা তুলে ধরা হয়েছিল। আর একটি তথ্য দিয়ে অবগত করতে চাই যে, এবার সিপিডব্লুডি’র ট্যাবলো–তে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হচ্ছে। দেশের পক্ষ থেকে এটা করা হচ্ছে। এটা প্রতিটি রাজ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ মুহূর্ত। আমি আশা করছি যে, এই কারণে আপনাদের সংখ্যা বাদ পড়েছে। আপনারা সক্রিয় যোগদান করবেন।’
এই চিঠি কার্যত গোটা ঘটনাকে এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ কেন বাদ গেল? তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেননি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। সংখ্যাধিক্যের কারণে বাদ পড়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। অর্থাৎ নেতাজিকে নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেই আর সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে তিনি মনে করছেন। সুতরাং ফলাফল দাঁড়াচ্ছে এবার নেতাজিকে নিয়ে বাংলার মানুষের আবেগকে গুরুত্ব দিল না কেন্দ্র। তাই থাকছে না বাংলার ট্যাবলো।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে এই বছর বাংলার ট্যাবলোর বিষয় ছিল নেতাজি এবং আইএনএ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে চিঠি লেখেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। তথাগত রায় টুইট করে প্রধানমন্ত্রীকে আর্জি জানান। তারপরও বাংলার ট্যাবলো স্থান পাবে না নয়াদিল্লির রাজপথে।
তামিলনাড়ুও ট্যাবলো সেখানে পাঠাতে পারছে না। তাদেরও বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনও। স্ট্যালিনের চিঠি থেকে জানা যাচ্ছে, তাঁদের ট্যাবলোর বিষয় ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনে তামিলনাড়ুর ভূমিকা। কিন্তু তাতেও সাড়া দেওয়া হয়নি। দুটি অবিজেপি রাজ্যকে বাদ দেওযা হল সাধারণতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো নিয়ে। যার পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।