স্কুলে গ্রুপ সি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি মামলাতে জামিন পেলেও নবম দশমের শিক্ষক নিয়োগের মামলায় মিলল না স্বস্তি। সেই মামলায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে হেফাজতে পাঠাল আদালত। আলিপুর আদালত এই মামলায় প্রাক্তন সভাপতিকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে জামিন পেলেও এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: জামিন পেলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি, কল্যাণময়কে মানতে হবে একাধিক শর্ত
স্কুলে গ্রুপ সি নিয়োগের মামলায় আগেই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। বুধবার সেই মামলায় জামিনের আবেদনের শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানে কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির কোনও নথি, হিসেব বহির্ভূত সম্পত্তির হিসাব দেখাতে পারেনি সিবিআই। যার ফলে কল্যাণময়ের শর্তসাপেক্ষ জামিন মঞ্জুর করে ডিভিশন বেঞ্চ। উল্লেখ্য, এক বছর ধরে তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যেই বেআইনি নিয়োগপত্র, প্রয়োজনীয় নথি বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। তবে প্রাক্তন শিক্ষাকর্তার বিরুদ্ধে সেরকম কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা। বেঞ্চের মতে, এই মামলায় তথ্য বিকৃত করার সুযোগ নেই। কারণ এই মামলার সাক্ষীদের একটা বড় অংশ সরকারি আধিকারিক। ইতিমধ্যেই তাঁদের অনেকের জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে সাক্ষীদের প্রভাবিত করা সম্ভাবনা খুব কম। তাছাড়া কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তাঁর আইনজীবী। সেই সমস্ত কথা মাথায় রেখেই শর্ত সাপেক্ষে তাঁকে জামিন দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
অন্যদিকে, স্কুলে গ্রুপ সি নিয়োগের মামলার পাশাপাশি এসএসসিতে শিকক্ষ নিয়োগে দুর্নীতির মামলাও চলছে। সেই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আগেই এই মামলায় কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আলিপুর আদালতের কাছে আবেদন করেছিল। বুধবার সেই আবেদনে সায় দেয় আলিপুর আদালত। সেই সংক্রান্ত মামলায় আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কল্যাণময়কে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন নিম্ন আদালতের বিচারক। প্রসঙ্গত, সিবিআই তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের জামিনের শুনানির মামলাতেও ফের সেই প্রশ্ন ওঠে ডিভিশন বেঞ্চে। উল্লেখ্য, জামিনের শর্ত হিসেবে কলকাতা হাইকোর্ট কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে কলকাতা পুরসভা এলাকায় থাকার পাশাপাশি বিধাননগর কমিশনারেট এবং পার্কস্ট্রিট থানা এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না বলে জানিয়েছিল হাইকোর্ট। তাছাড়া পাসপোর্ট নিম্ন আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছিল। তবে নিম্ন আদালত হেফাজত দেওয়ার ফলে আপাতত তাঁকে জেলে থাকতে হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে গ্রেফতার করা হয়েছিল কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে।